জয়পুরহাটে জমি নিয়ে বিরোধে হ’ত্যা, দুই নারীসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবন

রাজশাহী

মোঃ ইসরাফিল হোসেন,রাজশাহী

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সালেহ মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ১৭ জনকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। খালাস দেওয়া হয়েছে মামলার পাঁচ আসামিকে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জয়পুরহাট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।

জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সাজাপ্রাপ্ত ১৭ জনের মধ্যে দুইজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। দণ্ডপ্রাপ্ত ১৫ জনকে পুলিশি পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- আরিফুল প্রাং, আবু নাসের প্রাং, ডা. শাহজাহান আলী, হাদিউজ্জামান প্রাং, আশরাফ আলী, মোহাম্মদ আলী ওরফে লাল মোহাম্মদ, মোহাম্মদ আলী প্রাং, জহির প্রাং, শামছুল আলম, সায়েম উদ্দিন, ওবাইদুল প্রাং, সইম প্রাং, রহিম প্রাং, আবু সাঈদ, আবু বক্কর, বানু বেগম ও সাহেনা বেগম।

এদের মধ্যে আশরাফ আলী ও আবু সাঈদকে পলাতক দেখানো হয়েছে। তারা সকলেই পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর, চকপাড়া ও রাঘবপুর এলাকার বাসিন্দা।

আর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- অমিছা বেগম, শহিদুল ইসলাম, বেলছি বেগম, হাফেজা ফকির ও সাবদুল ফকির।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, আয়মারসুলপুর চকপাড়া গ্রামের সালেহ মোহাম্মদদের সঙ্গে প্রতিবেশী হাদিউজ্জামানদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল।

এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়। গত ২০০৯ সালের ২ মে সকাল ৮টার দিকে সালেহ মোহাম্মদ নিজের শ্যালো মেশিনের ঘর ভেঙে টিন নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বাড়ির অদূরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

এতে সালেহ মোহাম্মদ গুরুতর আহত হয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে পানি পান করতে চান। প্রতিপক্ষরা তাকে জোরপূর্বক শুকনা মরিচের গুঁড়া মেশানো পানি পান করান। এতে সালেহ মোহাম্মদ আরও নিস্তেজ হয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই আজিজুল হক বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় প্রতিপক্ষের ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত করেন পাঁচবিবি থানা পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মমিনুল হক।

তদন্ত শেষে আরও তিনজনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তিনি। মামলার দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আদালত আজ এই রায় দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *