অবাক কান্ড! পুঠিয়ায় একটি পুরো বাজারে নেই কোন বিদ্যুৎ সংযোগ!

রাজশাহী

ইমাম হোসাইন:

বাংলাদেশ সরকার শত ভাগ বিদ্যুৎ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া উদ্যোগ নিয়েছিলেন অনেক আগে থেকেই। তা বাস্তবায়নও হয়েছে। সারা বাংলাদেশে ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছালেও এমন একটি বাজারের সন্ধান মিলেছে যেখানে জন্মের পর থেকে ওই বাজারে বিদ্যুতের মুখ দেখেনি কেউ। এবার এমন একটি এলাকার সন্ধান মিলেছে যে এলাকার পুরো বাজারে নেই কোন বিদ্যুৎ বা বিদ্যুতের লাইন।

এমন ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর পুঠিয়া-দুর্গাপুর ওই দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা, পুঠিয়া উপজেলার বাসুপাড়ার ভেগার মোড়ে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, দিনের বেলা বোঝার উপায় নেই, রাতের বেলা সেখানে গেলে হয়তো বোঝা যাবে লোডশেডিং এর কারণে বাজারটি অন্ধকারের নিমজ্জিত রয়েছে।  কিন্তু না ওই বাজারে বিদ্যুতের আলো তো দূরের কথা, কখনোই কোন ব্যক্তি বিদ্যুতের সরঞ্জামেরও মুখ দেখেনি। বিদ্যুৎ না থাকার ওই বাজারটি অনুন্নত হয়ে পড়ে আছে। সন্ধ্যা লাগার পরপরই দোকানপাট বন্ধ করে বাসায় চলে যেতে হয় তাদের।

যার কারণে রাতের আধারে বেশ কয়েকবার ঘটেছে দোকানপাট চুরির মত ঘটনা। ওই বাজারে বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যার পর মানুষ ওঠা বসাও কম করেন। ঐ এলাকার মানুষদের বাসায় রাতের বেলা কোন জিনিসের দরকার পড়লে স্থানীয় ভেগার মোড় সেখানে দোকান বন্ধ থাকায়,  দূরে গিয়ে অন্য বাজার থেকে কিনে আনতে হয়। এর সমস্যা হিসেবে স্থানীয়রা বিদ্যুৎ না থাকাকেই তাই করছেন। ওই এলাকা নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ পুঠিয়া জোনাল অফিসের আওতায় রয়েছে বলে জানান পল্লী বিদ্যুৎ অফিস।

এই বিষয়ে সরেজমিনে কথা হয় স্থানীয় ফার্মেসি ব্যবসায়ী ডা. রতন কুমার সহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় দোকানীর সাথে, তারা বলছেন, আমরা জন্মের পর থেকে এই বাজারে কখনো বিদ্যুতের মুখ দেখেনি। বাজারের দুই পাশে দুইটি বাড়ি আছে তারাও বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অন্ধকারে থাকেন। আমরা বাজারের দোকানদাররা বহুবার পুঠিয়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বলেও কোন কাজ হয়নি। এই বাজারে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে সন্ধ্যা লাগতেই মানুষজন চলে যায়। এতে করে আমরা যারা ব্যবসায়ীরা আছি তাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা আশা করি খুব দ্রুত এ বাজারে বিদ্যুৎ আসবে, এমনটাই বলছিলেন বাজারের স্থানীয় দোকানদাররা।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় শীলমাড়িয়া ইউপির সাধারণ সদস্য (মেম্বার) রফিকুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যুৎ নেবার জন্য দোকানদাররা কখনো চেষ্টা করেনি। তাই ওই বাজারে বিদ্যুৎ আসেনি। এক প্রশ্নের জবাবে মেম্বার রফিকুল ইসলাম বলেন তিনি নিজেও কখনো ওই এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১, পুঠিয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ইয়াকুব আলী শেখ বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমার জানা মতে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। এটা কেমন কথা যে একটা পুরো বাজারেই বিদ্যুৎ নেই। আপনাদের থেকে জানলাম খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি দেখছি। আর কেউ এই বিষয়ে দরখাস্ত দিলে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *