বগুড়া’য় ভূয়া ইউএনও পরিচয়ে অর্থ আদায়কারী চক্রের মূলহোতাসহ ০২ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার

রাজশাহী

মোঃ ইসরাফিল হোসেন রাজশাহী:

ভূয়া ইউএনও পরিচয়ে অর্থ আদায় সংক্রান্তে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ১১/০৬/২০২৩ খ্রি. তারিখ বগুড়া জেলার সদর থানার মামলা নং-৩৫, তারিখ-১১ জুন,২০২৩ ধারা-১৭০/৪০৬/৪২০ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু হলে তাৎক্ষণিক বগুড়া জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম, পিপিএম মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে ডিবি বগুড়া’র ইনচার্জ মোঃ সাইহান ওলিউল্লাহ, এর নেতৃত্বে নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে টিম ডিবি বগুড়া’র একটি চৌকস টিম ১২/০৬/২০২৩ খ্রি. তারিখ বিভিন্ন সময়ে বগুড়া জেলার সদর, শিবগঞ্জ থানা ও গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একই তারিখ ভোর ০৪:০০ ঘটিকার সময় গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানাধীন গাছাবাড়ী পশ্চিমপাড়াস্থ আসামী মোঃ তুহিন এর বসত বাড়ি হতে তদন্তে প্রাপ্ত ভূয়া ইউএনও পরিচয়ে অর্থ আদায়কারী চক্রের মূলহোতাসহ ০২ জন সক্রিয় সদস্য মোঃ তুহিন মিয়া (৩৫) ও আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু (১৬) দেরকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ০৩(তিন) টি বাটন ও ০১(এক) টি স্মার্ট মোবাইল ফোন সীম কার্ডসহ (যাহা অপরাধ কর্মে ব্যবহৃত হয়েছে) আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তে প্রাপ্ত ধৃত আসামী ও অভিযুক্ত জানায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবত পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে ইউএনও, ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদের সচিবসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ও পদবী ব্যবহার করে অসৎ উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসিতেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ০৭/০৬/২০২৩ খ্রি. তারিখ অনুমান সকাল ০৯.০০ ঘটিকার সময় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে তাদের নিকট হতে বগুড়া জেলার সদর থানার ডিউটি অফিসারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে।

পরবর্তীতে ধৃত আসামী মোঃ তুহিন মিয়া তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর হতে বগুড়া সদর থানার ডিউটি অফিসার এর ব্যবহৃত সরকারী মোবাইল নাম্বারে কল করে নিজেকে বগুড়া সদর উপজেলার ইউএনও পরিচয় দিয়ে জানায় বগুড়া সদর থানাধীন নামাজগড় এলাকায় একটি সমস্যা হয়েছে জরুরী ডিউটি পার্টিকে তার সাথে কথা বলতে বলে। ডিউটি অফিসার সরল বিশ্বাসে উক্ত নম্বরটি উপশহর পুলিশ ফাড়িঁ এলাকায় ডিউটিরত টহল টিমের কর্তব্যরত অফিসারকে দিয়ে ইউএনও পরিচয় প্রদানকারী ব্যক্তির উল্লেখিত নম্বরে ফোন দিতে বলে। ট

হল টিমের কর্তব্যরত অফিসার সরল বিশ্বাসে ইউএনও পরিচয় প্রদানকারী ব্যক্তিকে ফোন দিলে তিনি তাকে জানান যে, উপশহরে অবস্থিত খাবারের হোটেলে গিয়ে মালিককে তার সাথে কথা বলিয়ে দিতে। টহল টিমের কর্তব্যরত অফিসার বগুড়া সদর থানাধীন উপশহর বাজারস্থ শাহিন হোটেলে গিয়ে হোটেল মালিককের সহিত কথা বলিয়ে দিলে ভূয়া ইউএনও পরিচয়দানকারী মোঃ তুহিন মিয়া কৌশলে হোটেল মালিকের মোবাইল নম্বর নিয়ে নেয় এবং টহল টিমের কর্তব্যরত অফিসারকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে।

তার কিছুক্ষণ পরে ভূয়া ইউএনও পরিচয়দানকারী মোঃ তুহিন মিয়া উল্লেখিত মোবাইল নম্বর হতে হোটেল মালিক মোঃ শাহিনকে ফোন করে জানায়, উপশহর এলাকায় ০৪ টি হোটেলের মধ্যে ০৩ হোটেল বন্ধ করে দিবে এবং ০১ টি হোটেল খোলা থাকবে। তাই তার হোটেল খোলা রাখতে চাইলে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা দিতে হবে। ভূয়া ইউএনও পরিচয়দানকারীর কথায় ভীত হয়ে হোটেল মালিক মোবাইল নম্বর ০১৮৭৮-৯৩৫৫৭৬ এর নগদ একাউন্টে ১০,০০০/-(দশ হাজার) টাকা প্রেরণ করে। প

রবর্তীতে একই উপায়ে উপশহর বাজারস্থ রবিউল ইসলাম এর খাবারের হোটেলের মালিককে ভয় ভীতি দেখিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর এর নগদ একাউন্টে ৬,০০০/-(ছয় হাজার) টাকা হাতিয়ে নেয়। তদন্তে প্রাপ্ত ধৃত আসামী ও অভিযুক্ত পেশাদার প্রতারক তারা পরস্পর দীর্যদিন যাবত দেশের ময়মনসিংহ, শরিয়তপুর, জামালপুর, লক্ষীপুর, টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে এভাবেই প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসিতেছিল।

এছাড়া তারা মোবাইল ফোনে ইউএনও, ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদের সচিবসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ও পদবী ব্যবহার করায় তাদের প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কাজটাও সহজ হয়ে যায় বলেও স্বীকার করে।

প্রকাশ থাকে যে, তদন্তে প্রাপ্ত ধৃত আসামী ও অভিযুক্তকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, তদন্তে প্রাপ্ত ধৃত আসামী মোঃ তুহিন মিয়ার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ০১ টি মামলা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *