বাগমারায় উদ্বোধন হলো বাংলাভাই এর আস্তানায় নির্মিত শহীদ মিনার

বাগমারায় উদ্বোধন হলো বাংলাভাই এর আস্তানায় নির্মিত শহীদ মিনার

রাজশাহী

বাগমারা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাগমারায় বাংলা ভাই এর আস্তানায় নির্মিত শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সকালে উদ্বোধন করা হলো সেই শহীদ মিনার। প্রধান অতিথি হিসেবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করবেন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক।

প্রধান অতিথি বলেন, বাংলা ভাই এই নামের সাথে জড়িয়ে আছে হাজারো বঞ্চনা নিপীড়ন, নির্যাতন ও রক্তপাতের ইতিহাস। ২০০৪ সালে বাংলা বাহিনীর জুলুম নির্যাতনে বাগমারা সহ আশেপাশের এলাকায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়। গুম হয় আরো শতাধিক এবং পুঙ্গত্ববরণ করেন আরো অর্ধশত।

তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতের মদতপুষ্ট হয়ে ওই বছর মার্চ-এপ্রিল বাগমারা সহ আশেপাশের এলাকায় তথাকথিত চরমপন্থী দমনের নামে তাÐব চালায় বাংলা ভাই বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান তাত্বিক গুরু শায়ক আব্দুর রহমান ও সেকেন্ড ইন কমাÐ সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলাভাই গঠন করেন। পরে তারা অন্য একটি বাহিনী গঠন করে তার নাম দেন জেএমবি।

এই জেএমবি’র প্রথম ঘাটি বা আস্তানা স্থাপিত হয় বাগমারার হামিরকুৎসায়। তিনি আরো বলেন, বাংলাভাই প্রগতিশীল চেতনার লোকজনদের নিয়ে হত্যা, নির্যাতন করতো। মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো হতো। হামিরকুৎসায় স্থাপতি হয় বাংলা ভাইয়ের ক্যাম্প। এই ক্যাম্পে বসেই বাংলা ভাই এলাকা দাঁপিয়ে বেড়াতেন।

রমজান কাঁয়ার বাড়ি সংলগ্ন একটি আম বাগান ও হামিরকুৎসা হাইস্কুল মাঠে টর্চার সেল স্থাপন করে দিনরাত তারা নির্যাতন চালাতেন। বাংলাভাই এর সেই আস্তানায় নতুন ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলো। এটি শুধু শহীদ মিনার না। শহীদ মিনার মানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ বাংলাদেশের জন্য। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো।

শহীদ মিনার স্বাধীনতার মূল স্তম্ভ। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ পর্যায় ক্রমে স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নতুন প্রজন্ম জানবে ভাষা শহীদদের ইতিহাস। সবাইকে শহীদদের স্মরণকরে দেশ প্রেমে আবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানান তিনি।

এটিমূলত এলাকার তরুণ প্রজন্ম বাংলা ভাইয়ের সেদিনের তাÐবকে স্মরণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষার ইতিহাস তুলে ধরতে শদীদ মিনার নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির ছোট ভাই কেএন ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ এর পরিচালক মনিমুল হক। শহীদ মিনারটি নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নত টাইলস ও মার্বেল পাথর। শহীদ মিনারের পাশে নির্মিত হয়েছে একটি গোলচক্কর।

এখানে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলার দূরত্ব মাইল ফলক লেখাটি পথচারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। যে মাঠে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে সেই মাঠেই শহীদ মিনার নির্মিত হওয়ায় শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীর অনেক খুশি। এর মাধ্যমে কলঙ্ক মোচন হয়েছে।

জাগ্রত হবে দেশপ্রেম। শহীদ মিনার উদ্বোধন কালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কেএন ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ এর পরিচালক মনিমুল হক, হামিরকুৎসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, মাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল হক, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাক্কাক, হামিরকুৎসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুজ্জামান সহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্য ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়া পরিচালনা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *