বাগমারা'য় জুয়ার ভয়াবহতায় শঙ্কিত প্রশাসন, শীঘ্রই নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ

বাগমারা’য় জুয়ার ভয়াবহতায় শঙ্কিত প্রশাসন, শীঘ্রই নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ

রাজশাহী

মো: জাহাঙ্গীর আলম স্টাফ রিপোর্টার:

রাজশাহীর বাগমারায় উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে অনলাইন জুয়া সহ ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধ।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীঘ্রই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,এফ,এম আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই সভা। সভায় বক্তাগণ উপজেলার আইন শৃংখলার দিক নির্দেশনা- সমাধান, অনলাইনে জুয়া খেলা প্রতিরোধ, বিকাশ প্রতারণা রোধ, ইমো হ্যাকিং চক্রের ফাঁদ থেকে রক্ষা- প্রতিরোধ ও মাদক প্রতিরোধ নিয়ে বিশেষ আলোচনা করা হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী অনীল কুমার সরকার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ আক্তার বেবী, থানার তদন্ত কর্মকর্তা শয়েব খান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খন্দকার মাক্কামাম মাহমুদা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নরদাশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, মাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন প্রমূখ।

এবারে আইন শৃংখলা কমিটির সভায় সব চেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া বিষয় হচ্ছে অনলাইন জুয়ার রমরমা ব্যবসা। অনলাইনে এই জুয়া খেলতে গিয়ে অনেকেই সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে। কেউ কেউ সিন্ডিকেট তৈরি করে কোটিপতি বনে যাচ্ছে। এছাড়া উঠতি বয়সের ছেলেরা পড়া-লেখা বাদ রেখে জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে বলে দাবি করা হয়। জানা গেছে এই চক্রটি অনলাইনে জুয়াড়ীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য গোপনে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে অমুকে এত লক্ষ, সে এত লক্ষ টাকা পেয়েছে এই অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে।

এতে অনেকে লোভে পড়ে ও কৌতুহলী হয়ে নিজের মোবাইলে জুয়া এ্যাপস ডাউন লোড করে সেখানে বিকাশ বা নগত হিসাবের মাধ্যমে টাকা তুলে নেমে পড়ছে গেম খেলতে। এভাবে গেম খেলতে খেলতে এক পর্যায়ে সে নিঃস্ব হয়ে পড়লেও বিষয়টি গোপন রাখে এবং বলে বেড়ায় সে এভাবে জুয়া খেলে অনেক টাকা জিতেছে। যাতে এই লাইনে আরো সদস্য বৃদ্ধি পায়। বাগমারার সব এলাকাতেই এই জুয়া খেলার প্রবনতা বেড়েই চলেছে।

বিশেষ করে উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকা, মাড়িয়া ইউনিয়নের গাঙ্গোপাড়া, শিকদারী বাজার, তাহেরপুর, মচমইল ও হাট গাঙ্গোপাড়া অন্যতম। এই গেমে আসক্ত অধিকাংশই মাদকাশক্ত। তারা দিন রাত চব্বিশ ঘন্টাই এই গেম নিয়ে পড়ে থাকে। এলাকার সচেতন মহলের মতে এই গেমে আসক্তির ফলে পারিবারিক নানান অশান্তি, কোন্দল, ঝগড়া বিবাদ, দাম্পত্ত্য কলহ ও সংসার ভাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে।

যে ভাবে জুয়া খেলার প্রবনতা বাড়ছে এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে এর ভয়াবহতা রোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাগমারায় পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট(এটিইউ) কার্যক্রম চালু করতে অনুরোধ করা হয়। এসময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী, ভবানীগঞ্জ সরকারী বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হাতেম আলী, বড়বিহানালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মিলন, যোগীপাড়ার চেয়ারম্যান মাজেদুল ইসলাম সোহাগ, বাগমারা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আফাজ্জল হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সিংহ সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধান ও আইন শৃংখলা কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *