বাগমারায় নজর কেড়েছে ইন্তাজ আলীর জোড়া কালা মানিক, গরু কিনলে খাসি ফ্রি 

রাজশাহী

শামীম রেজা,  বাগমারা 

গরু যেন দেখতে দানবের মতো। প্রথম দেখাতে আতকে উঠবে সবাই। এত বড় গরু কিভাবে লালনপালন করছে কৃষক ইন্তাজ আলী। কি খাওয়ানোই বা হয় সেই গরু দুটিকে। দুই গরুর রং কালো। তবে কালোর মাঝে সাদা দাগ রয়েছে।

গরু দুটির উচ্চতা পাঁচ ফিটের উপরে। দৈর্ঘ্য বেশ কয়েক ফুট। সারা শরীর কেবল মাংস আর মাংস। আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ৪ বছর ধরে লালন পালন করে আসছেন জোড়া কালা মানিককে। গরু দুটি ক্রয় করলে পাবেন দুটি খাসি।

এতক্ষণ বলছিলাম রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের কৃষক ইন্তাজ আলীর গরুর কথা।  সন্তানের মতো যত্ন করে বাড়িতে লালন পালন করে আসছে গরু দুটি। গরু দুটির বয়স ৪ বছর।  তবে দুটোর বয়সের পার্থক্য ১৫ দিনের।

দেখে চেনার উপায় নেই এরা আলাদা গাভীর। এখন থেকে ৪ বছর আগে দুটি গাভী কালা মানিক জোড়ের জন্ম দেয়।  সংসারের খরচ বেড়ে যাওয়ায়  কালা মানিক জোড়ের মা’ দের বিক্রি করে দেয় ইন্তাজ আলী।  এরপর থেকে কালা মানিক এর যত্ন নেয়া শুরু। নিজের হাতে এতো বড় গরু করতে পরবেন সেটা কখনো কল্পনা করতে পারেননি তিনি।  

সম্পূর্ণ দেশি পদ্ধতি ব্যবহার করে কালা মানিক জোড়কে বড় করা হয়েছে। গরু দুটি অনেক বড় হওয়ায় প্রতিদিন অনেক লোকজন আসেন দেখতে। অনেকেই হয়তো এত বড় গরু বাড়িতে লালন পালন করতে পারেননি। তাই নিজ চোখে একবার হলেও গরু দুটি দেখতে আসছেন অনেকে। 

বাড়িতে তৈরি ঘাস, খৈল, বিভিন্ন কালাই এর ভুষি সহ খড় খাওয়ানো হয়। কালা মানিকজোড়ের ওজন প্রায় ২০ থেকে ২২ মন করে। দাম হাঁকানো হচ্ছে ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা। তবে গরুর মালিক ইন্তাজ আলী জানিয়েছেন প্রতিটি গরুর সাথে একটি করে খাসি উপহার হিসেবে দেবেন । গরুর দাম দিতে হলেও খাসির দাম দিতে হবে না। 

ইন্তাজ আলীর বড় গরু দেখে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন এত বড় গরু কে কিনবে। তবে ৪ বছর ধরে গরু লালনপালন করতে খরচ করতে হয়েছে অনেক টাকা। দুই গরুতে প্রায় ৮ লাখ টাকার মতন খরচ হয়েছে। 

গরু দুটি অনেক বড় হওয়ায় সারাক্ষণ দুইটা ফ্যান চালাতে হয়। তবে ৪ বছর থেকে একই গোয়ালে রয়েছে গরু দুটি। গরু অনেক বড় হওয়ায় গোয়ালের বাহিরে বের করা সম্ভব হয় না ইন্তাজ আলীর পক্ষে। 

কৃষকের ঘরে এত বড় গরু হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার বলে জানান ইন্তাজ আলী। তবে উন্নত গরুর খামারে এখন অনেক বড় বড় গরু তৈরি করা হচ্ছে। 

রেজাউল করিম নামে এক কৃষক জানান, আমার দেখা মতে এই কালা মানিক জোড়া বাগমারার সবচেয়ে বড় গরু। বাড়িতে লালন-পালন করার কারণে এর মাংসও অনেক ভালো হবে বলে ধারণা করছি। 

গরুর মালিক ইন্তাজ আলী বলেন, আমার এই দুই গরুর পেছনে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। নিয়মিত গোসল করানো। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করানো সহ অনেক কিছু। সন্তানের মতোই কালা মানিকদের লালন পালন করছি। দীর্ঘ চার বছর থেকে নিজ হাতে এদেরকে লালন পালন করছি। এবারের ঈদে গরু দুটি বিক্রি করতে চাচ্ছি।

অনেক বড় গরু হয় সেভাবে কোন ক্রেতা পাচ্ছিনা। ঈদুল আযহায় যেহেতু অনেক বড় বড় গরু বিক্রি হয়ে থাকে সেজন্য ধারণা করছি এই ঈদে যেনো আমার গরু দুটি বিক্রি হয়। অনেক বড় গরু হওয়ায় দুই গরুর দাম চাচ্ছি ২০ লাখ টাকা। যারা আমার এই গরু দুটি কিনবেন তাদেরকে দুটি খাসি উপহার হিসেবে দেব। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, বাগমারায় ছোট বড় অনেক গরুর খামার রয়েছে। তবে অনেক কৃষক তাদের বাড়িতেই বড় বড় গরু পালন করে থাকেন। আমরা সর্বদাই খামারির পাশাপাশি এরকম উদ্যোক্তাদের গরু মোটাতাজাকরণে পরামর্শ দিয়ে থাকি। সেই সাথে গরু মোটাতাজাকরণে কৃষক এবং খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *