লালপুরে বিএডিসির ২৯ পাম্পের মধ্যে ২৫ টিই অকেজো

রাজশাহী

এ জেড সুজন মাহমুদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:

নাটোরের লালপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে স্থাপন করা ২৯টি গভীর সেচ পাম্পের মধ্যে ২৫ টিই দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এতে সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ কৃষকরা। শুষ্ক মৌসুমে অগভীর নলকূপে ঠিকমতো পানি না পাওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

এতে ফসলে সেচ দিতে কৃষকের ভোগান্তি ও খরচ বেড়েছে। বড়াইগ্রাম বিএডিসির ক্ষুদ্র সেচ জোন অফিস সূত্রে জানা যায়, বিএডিসির সমন্বিত সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় লালপুরের বিভিন্ন এলাকায় সেচ-সংকট দূর করতে দুই কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন ২৯টি গভীর সেচ পাম্প স্থাপন করা হয়। এসব পাম্পগুলোর মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব, ভাড়া বকেয়াসহ বিভিন্ন কারণে ২৫টি পাম্প বন্ধ হয়ে যায়।

এগুলোর মধ্যে ৫টি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করেছে। বর্তমান মাত্র ৪টি চালু রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের উধনপাড়া মাঠে পরিত্যক্ত ছোট একটি ঘর। ঘরের ভেতরে-বাইরে গজিয়েছে গাছ, ময়লার স্তূপ। সেচপাম্পগুলো অকেজো পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে যন্ত্রাংশ।

এ সময় কথা হয় উপজেলার উধনপাড়া গ্রামের শাফায়েত উল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রকল্পের ড্রাইভার ও ম্যানেজার সেচের বেশি মূল্য নির্ধারণ করতেন। আদায় করা অতিরিক্ত অর্থ নিজেরাই ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিতেন। দেখা যেত গভীর নলকূপের চেয়ে ডিজেলচালিত শ্যালো ব্যবহারে লাভবান হতেন চাষিরা। তদারকি কমিটি, কর্মকর্তা, ড্রাইভার ও ম্যানেজারের কারণেই সরকারের এই প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে।

কৃষক জিয়াউর রহমান বলেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা গভীর নলকূপগুলো কোনো কাজে আসছে না। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় উদ্যোগও নেয়নি। এখন পানিসংকটে হাজার হাজার বিঘা জমি পতিত পড়ে আছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী রবিন আহমেদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানির স্তর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, গড়ে ৩৪ ফুট নিচে নেমে গেছে।

কোথাও যেন সুপেয় পানির সংকট না থাকে, এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, কৃষকেরা অগভীর নলকূপ স্থাপন করে চাষাবাদ করায় খরচ বাড়ছে। শুষ্ক মৌসুমে সেচ-সংকট দেখা দিচ্ছে।

বিএডিসির ক্ষুদ্র সেচ জোন বড়াইগ্রামের সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউল হক বলেন, লালপুরের অধিকাংশ সেচ পাম্প বন্ধ রয়েছে পাঁচটি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করেছে। বাকিগুলো চালুর চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি শারমিন আখতার বলেন, কৃষকেরা আবেদন করলে সেচ কমিটির মাধ্যমে বরাদ্দ এনে পাম্পগুলো চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *