সংবাদ প্রকাশের জেরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেই এম্বুলেন্স ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা

সংবাদ প্রকাশের জেরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেই এম্বুলেন্স ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা

জাতীয়

সুনামগঞ্জ থেকে,আমির হোসেন::

সুনামগঞ্জ ২৫০শয্যা সদর হাসপাতালের প্রাইভেট এম্বুলেন্সকে ঘিরে একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে সদর হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছেনা প্রাইভেট এম্বুলেন্স। যার কারনে রোগীদের রেফার্ট করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট যেতে মিলছে না সরকারী কিংবা প্রাইভেট এম্বুলেন্স। ফলে রোগীরা হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার।

কি এমন ঘটেছে হঠাৎ করেই হাসপাতাল থেকে উদাও সকল প্রাইভেট এম্বুলেন্স ? আর কোথায় থাকে হাসপাতালের একটি মাত্র ভিআইপিদের জন্য বরাদ্দকৃত এম্বেুলেন্সটি যা সাধারণ মানুষের ভাগ্যে জুটেনা ? কেনইবা সদর হাসপাতালের প্রাইভেট এম্বুলেন্স গুলি বন্ধকরে অবরোধ করবে চালকেরা ? কিসের কারনে রোগীরা হবে ভোগান্তির শিকার? এমনটি ঘটে চলেছে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে।

সরেজমিনে এবং ভোক্তভোগীদের সাথে আলাপ করে জানাযায় গত ৭ এপ্রিল দৈনিক সুনামগঞ্জ খবর পত্রিকার ওয়েব সাইটে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগে ভাইরাল হয়। যেখানে একটি অংশে বলা হয়েছে সিন্ডিকেট দিয়ে হচ্ছে এম্বুলেন্স ব্যাবসা যা বাস্তবতার সাথে কোন মিল নেই বলে দাবী জানিয়েছেন এম্বুলেন্স চালকেরা। জানা যায় হাসপাতালে সরকারী এম্বুলেন্স ১টি। রোগীদের সেবা দানের জন্য এম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করেছেন কয়েকজন ড্রাইভার ও মানবিক যুবকেরা। যেখানে কোন সিন্ডিকেট নেই, ২০/২২টির মত প্রাইভেট এম্বুলেন্স রয়েছে সেখানে । জানা যায় হাসপাতালের তিনটি এম্বুলেন্স এর মধ্যে মাত্র ১টি সচল এবং ১জন ড্রাইভার রয়েছে, বাকি ২টি এম্বুলেন্স বিআরটি কর্তৃক অকেজো ঘোষিত ।

একটি সরকারী এম্বুলেন্স ধারা কোন ভাবেই সম্ভব নয় রোগীদের সেবা প্রধান করা । ১১টি উপজেলা থেকে শতশত রোগীরা আসে হাসপাতালে। এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট রেফাট করতে হয় অনেক রোগীদের সিলেটে।এসময় সরকারী এম্বুলেন্স অনেকের ভাগ্যে জুটেনা । ভিআইপিদের ফোন বা সুপারিশ লাগে তবে সেটির সন্ধান মিলে। তা নাহলে বছরে একবার ও সেটির দেখা মিলেনা। কোয়াটারের গ্যারেজ অথবা স্টাফদের নিয়ে হাটবাজারে দেখা যায় ব্যস্ত থাকতে সরকারী ড্রাইভার মুহিতকে।

তখন প্রাইভেট এম্বুলেন্স রোগীদের একমাত্র ভরসা হয়ে দাড়ায়। ২২শত টাকা ,অক্সিজেন না লাগলে দুই হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে সিলেট রোগী নিয়ে যাওয়া হয়। সিরিয়াল মোতাবেক চলে ঐসমস্ত এম্বুলেন্স। পাশাপাশি ৯৯৯এ ফোন করেও সরকারী এম্বুলেন্স পাওয়া যায়না অসহায় রোগীদের বেলয়া । ঐ সমস্ত প্রাইভেট এম্বুলেন্স ড্রাইভার এবং মালিকেরা মিলে সাহায্য করে বিনা টাকায় গরীব রোগীদের আনা নেওয়া করেন এমন দৃশ্য দেখা যায় ।

এতবড় একটি হাসপাতালে প্রাইভেট এম্বুলেন্স ছাড়া ১টি মাত্র এম্বুলেন্স দিয়ে কিভাবে রোগীদের সেবা প্রদান করা সম্ভব সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। হঠাৎ করে হাসপাতাল থেকে প্রাইভেট এম্বুলেন্স উদাও হয়ে যাওয়া এবং রোগীদের ভোগান্তির খবর শুনে রবিবার দিন ব্যাপী কয়েকজন সংবাদকর্মী সরেজমিনে অবস্থান নেন ।

প্রথমে চোখে পরে হাসপাতাল এড়িয়ায় একটিও এম্বুলেন্স নেই । এমন সময় পাথারিয়া গ্রাম থেকে বিষপান করে একটি মেয়ে গুরুত্বর অবস্থায় জরুরী বিভাগে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে সিলেটে রেফার্ট করেন। পরে ঐ রোগীর স্বজনরা দিশেহারা হয়ে পরেন। কোথাও এম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছেনা ,সরকারী এম্বুলেন্সটি তখন কোয়াটারের গ্যারেজে ছিল? ড্রাইভার মুহিতকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোন রোগী নিয়ে সিলেটে যাননি বলে জানান এবং এম্বুলেন্স কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাকে একজন সাংবাদিক ফোন করে বলেছেন উনার এম্বুলেন্স প্রয়োজন হবে তাই এখনও কোন রোগী নিয়ে যাইনি।

এসময় হাসপাতাল এলাকার যুবক নুরুল ইসলামকে বিষটি জানালে তিনি এক প্রাইভেট এম্বুলেন্স এর ড্রাইভারকে ডেকে এনে বিষপান করা রোগীকে সিলেট পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। দিরাই থেকে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত রোগী আজাদ মিয়া তিনি হাতে এবং পায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও কোন প্রাইভেট এম্বুলেন্স না পেয়ে জানান, এতবড় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসছি একটি এম্বুলেন্স পাচ্ছিনা।

তিনি বলেন শুনেছি এম্বুলেন্স এর বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে সেই জন্যে ড্রাইভাররা মিলে এম্বুলেন্স বন্ধ রেখেছেন । সাংবাদিকরা নিউজ করলে মানুষের ভোগান্তি কমে, কিন্তু এখন দেখছি এক সাংবাদিকের নিউজের কারনে জনগণের ভোগান্তি শুরু হয়েছে বলে সিএনজি করে চলে যান।
এসমস্ত রোগীদের ভোগান্তির চিত্র এবং প্রাইভেট এম্বুলেন্স এর ড্রাইভারদের অবরোধ ছিল দিনবর হাসপাতাল এরিয়ায়। কয়েকজন এম্বুলেন্স মালিক ও ড্রাইভারদের সাথে কথা বললে তারা জানান একটি সুনামধন্য পত্রিকার পেইজে প্রাইভেট এম্বুলেন্সকে জড়িয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে যার জন্য ট্রাফিক সার্জন দ্বারা যদি হয়রানি করানো হয়।

এমনটির ভয়ে কোন এম্বুলেন্স ড্রাইভার রোগী নিয়ে সিলেট যেতে চাচ্ছেন না। তারা বলেন নিজেদের পকেট থেকে সাহায্য তুলে অসহায় রোগীদের বিনা টাকায় সিলেটে পৌছে দেন। সুনামগঞ্জ সরকারী এম্বুলেন্স গরীবের ভাগ্যে জুটেনা । প্রাইভেট এম্বুলেন্স দিয়ে সেবা দেওয়া হয় এবং কোন সিন্ডিকেটের মাধমে এম্বুলেন্স ব্যবসা হয়না হাসপাতালে। অসহায় রোগীদের সেবা প্রদান করার লক্ষে পুরাতন মিনি মাইক্রোবাসকে এম্বুলেন্স বানিয়ে সার্ভিস দেওয়ার জন্য কয়েকজন মানবিক যুবকেরা এম্বুলেন্স বানিয়েছেন।

জানাযায় সুনামগঞ্জ সানক্রেড হাসপাতালের একটি এম্বুলেন্স রয়েছে যা গরীব রোগী নিয়ে সিলেট গেলে টাকা লাগে ২৫শত টাকার উপরে এছাড়াও আর একটি নতুন এম্বুলেন্স রয়েছে, সেটি ৩ হাজার টাকার নিছে রোগী নিয়ে যায়না। কিন্তু যারা লাইটেস কিনে এম্বুলেন্স বানিয়েছেন তারা ১৮শত থেকে ২ হাজার টাকায় এবং অক্সিজেনসহ ২২শত টাকার মধ্যে রোগী নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে গিয়ে ভর্তিসহ সেবা প্রদান করে থাকেন। কিন্তু এক সাংবাদিকের আত্মীয়কে না নেওয়ার কারনে তাদের বিরুদ্ধে নিউজ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তরা। এছাড়াও এক এম্বুলেন্স মালিক বলেন ঐ সাংবাদিক ট্রাফিক সার্জনসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের এম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন । কি করে প্রাইভেট এম্বুলেন্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *