সুদের টাকা দিতে না পারায় কৃষককে শিকলবন্দি, সুদ কারবারি গ্রেফতার

সুদের টাকা দিতে না পারায় কৃষককে শিকলবন্দি, সুদ কারবারি গ্রেফতার

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নাটোরে সুদের টাকা দিতে না পারায় আসাদ আলী (৫৫) নামে এক কৃষককে শিকলবন্দি করার ঘটনায় অভিযুক্ত সুদ কারবারি আব্দুল আজিজকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের অভিযুক্তের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানায়, শনিবার সুদের টাকা আদায়ের জন্য ভুক্তভোগী ওই কৃষককে বাড়ি থেকে তাকে জোর করে তুলে এনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিকলবন্দি করে রাখেন অভিযুক্ত আব্দুল আজিজ। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ভোরে অভিযুক্তকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী শাহানার খাতুন বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় মামলা করলে আজিজকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

জানা গেছে, ২০২০ সালে জমি লিজের শর্তে সুদের কারবারি আজিজের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেন কৃষক আসাদ। প্রথম দুই বছর সুদের টাকা ঠিকমতো পরিশোধ করলেও চলতি বছরের টাকা দিতে পারেননি তিনি। অনেকবার তাগাদা দিয়েও টাকা না পেয়ে শনিবার সকালে কৃষক আসাদের বাড়িতে গিয়ে তার হাত-পা বেঁধে তুলে নিয়ে আসেন আব্দুল আজিজ ও তার লোকজন। পরে আজিজের বাড়ির বারান্দার খুঁটির সঙ্গে কোমরে শিকল পরিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ওই কৃষককে।

কৃষক আসাদ আলী বলেন, তিন বছর আগে আমি জমি লিজের ভিত্তিতে সুদে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। গত দুই বছরে ২০ হাজার টাকা সুদ এবং আসল ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। বাকি ৫০ হাজার টাকা এ বছর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই একটি দুর্ঘটনায় আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাই।

তিনি বলেন, সংসারে স্ত্রী ও দুই মেয়ে আছে। একটি ছেলে ছিল সে বাড়িতে থাকে না। আমার উপার্জনেই সংসার চলতো। অভাবগ্রস্ত হয়ে যাওয়ায় আজিজের পাওনা টাকা দিতে বিলম্ব হচ্ছিল। তাই আজিজ ও তার বাবা আফজাল হোসেন সঙ্গে কয়েকজনকে নিয়ে আমার বাড়িতে আসে।

আনুমানিক সকাল ৮টার সময় আমাকে জোর করে হাত-পা বেঁধে তারা তুলে নিয়ে যায়। এরপর আব্দুল আজিজের বাড়ির বারান্দায় কোমড়ে শিকল পরিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। টাকা না দিতে পারলে আমাকে ছেড়ে দেবে না বলে জানায়। আমার এই মুহূর্তে টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।

নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *