রবিনুর চৌধুরী দিরাই:
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা স্বপ্ন দেখতেই বেশি ভালবাসে। কারন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা খুব ভাল করে জানে যে, স্বপ্ন ছাড়া তাদের জীবন রাঁঙানোর আর কোন রাস্তা নেই। জন্ম থেকেই মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের বিবেক, আত্মসম্মার্নবোধ গাড়ো হতে থাকে।কারন তারা খুব ভাল করে বুঝতে শিখে নেন যে, এই রঙ্গিন পৃথিবীতে তাদের জন্য অনেক বাঁধা নিষেধ নিয়ম করা আছে অনেক পূর্বে থেকে।
আর সব বাধা নিষেধ গুলো মেনেই থাকে বেচেঁ থাকতে হবে,,, তা না হলেই বিপদ। , মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা কখনো অন্যদের মত বেপোরোয়া চলতে পারেন না। কারন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা জীবনকে রাঁঙ্গাই স্বপ্ন দিয়ে। জানেন ই তো,,,স্বপ্ন হল গোলাপের মত। দূর থেকে দেখতে খুব সন্দুর দেখায়, কাছে আসলে সুগন্ধ টা ও বেশ মিষ্টি লাগে কিন্ত ছিড়তে গেলেই সাবধান। যেকোনো সময় হাত ও গোলাপের রং এ রঙ্গিন হয়ে যেতে পারে।
তাই খুব সাবধানে যন্ত করে গোলাপ ছিঁড়তে হয় যাতে কাঁটা হাতে বিঁধে না যায়। স্বপ্ন ও ঠিক তেমনি, খুব সাবধানে স্বপ্ন গুলো পূরণ করতে হয়, তা না হলেই স্বপ্ন গুলো আপনাকে হলদে রং এর আগুনের ফুলকি র মত জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দগ্ধ করে দিবে। , মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের চাওয়া টা খুব বড় ধরনের হয়ে থাকে কিন্ত পাওয়া অতি স্বল্প।
প্রায় মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের একটি ডায়রি থাকে আর ডায়রির গায়ে কাভার পেইজে কোনো এক রং এর মার্কার দিয়ে লেখা থাকে ছোট্ট একটা সতর্কবার্তা, “ডায়রিটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত।” আর,সেই ডায়রিটা খুললেই মনে হয় ডায়রির প্রতিটা পৃষ্টায় যেনো এক একটা লিষ্ট।
প্রতিটা পৃষ্টায় সে তার স্বপ্ন গুলোকে লিখে রাখে।প্রতি পৃষ্টায় লেখায় ভরপূর।আর ছেলেটি রোজ একবার হলেও ডায়রিটা খুলে দেখে আর ভাবে কিভাবে তার স্বপ্ন গুলো পূরণ করা সম্ভব। , মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মানেই সে একজন বড় মাপের অভিনেতা।কষ্টের মাঝে থাকলে ও ভাল থাকার অভিনয় টা বেশ ভালোই করতে জানে।কারন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা খুব বেশি মিথ্যা বলতে পারে।এমন ভাবে সাঁজিয়ে গুছিয়ে মিথ্যা বলে যে কেউ বুঝতে ই পারে না ছেলেটি মিথ্যা বলতেছে।
বন্ধুদের নিয়ে রাস্তার মোড়ে টংগি এর দোকান থেকে নাস্তা খেয়ে,নামিদামি কোনো রেষ্টুরেন্ট এর সামনে গিয়ে সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড দিয়ে স্ট্যাটাস দিতে পারে ” Feeling – awesome,,,— আজ অমুক রেষ্টুরেন্ট এ বন্ধুদের নিয়ে নাস্তা করার পর ক্যামেরা বন্ধি কিছু মুহুর্ত্ব , মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের গায়ের শার্ট পুরানো হলে ও সহজে ময়লা হয় না।একটা নতুন শার্ট কিনবো কিনবো বলতে বলতে ই আরো কয়েক মাস পার করে দেয়া যায়।
এবার কিন্ত একটা ভাল থেকে শার্ট – ই নিবো বলে মনে মনে ঠিক করে ও অনেক সময় মার্কেট গিয়ে আর সেই ভাল(দামী) শার্ট টা কিনা হয় না। পছন্দ হওয়া ভাল মানের শার্টটির দাম শুনেই বুখের বাম পাশে কেমন যেনো চিনচিন ব্যাথা অনুভব হয়। অবশেষে দামী শার্ট টা ও আর নেওয়া হয় না।
একটা হতাশের শ্বাস ছেড়ে হাসি মুখে দোকানদার কে খুব সহজে বলে ফেলি, ভাই আর একটু কম দামের দেখান তো। , । বুকের মাঝে তীব্র কষ্ট গুলো এলোমেলো ভাবে পাইচারি করতে থাকে। তারপর ও ছেলেটা ভাল থাকার অভিনয় করে যায়। কাউকে বুঝতেই দে না ,এমনকি তার পরিবারের মানুষ গুলো কে ও না। , এইভাবেই একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের কে বেচেঁ থাকতে হয়।চাওয়া না পাওয়ার মাধ্যে দিয়েই তার জীবন টাকে টেনে নিয়ে যেতে হয়।
তারপর ও তারা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসে কারন স্বপ্ন দেখা মানুষ গুলো কখনো খালি হাতে ফিরে না। হয়তো তাদের স্বপ্ন গুলো পূরণ হয়, নয় তো বা জীবনে বেচেঁ থাকার জন্য এক অভিজ্ঞতা অজর্ন করতে পারে।তবে খুব কম মানুষেই পারে জীবনের শেষ বিকেলে পৌঁছাতে। আর বাকী মানুষ গুলো জীবনের বেচেঁ থাকার বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়েই হতাশার মাঝে বেঁচে থাকে।
এমনকি একসময় ভুলে যার কিভাবে স্বপ্ন দেখতে হয় সেটা ও।শুধু বাস্তবতা নিয়েই বেঁচে থাকতে হয় তাদের কে। আর একসময় এইভাবেই জীবনে শেষ বয়সে এসে ইতি ঘটে সম্ভবত। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের জীবন।