মাটি মামুন রংপুর:
রংপুরের প্রকৃতিতে যতদূর চোখ যায় শুধু বোরো ধানের মৌ মৌ গন্ধ শোনা যাচ্ছে। এবার বিভাগের ৮ জেলায় কৃষি মৌসুমি শ্রমিকরা এবার বোরো মৌসুমে ধান কাটা মাড়াই করে একমাসে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় করবে।
গত কয়েক মৌসুম থেকে কৃষি শ্রমের মূল্য ৫/৬ গুণ বৃদ্ধি হওয়ায় শ্রমিকরা বেজায় খুশি বাজারে ধানের স্বাভাবিক দাম থাকায় কৃষকরাও শ্রমিকদের বেশি মূল্য দিতে বাধ্য হচ্ছে। জানা গেছে, রংপুর বিভাগে ৮ জেলার চাষিরা ৮ লাখ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছে।
এ পরিমাণ জমি থেকে প্রায় ৩৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ধান গোলায় তোলার আশা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহ থেকে এই অঞ্চলে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। মজুরি বেশি থাকায় কৃষি শ্রমিকরা রয়েছে চাঙ্গাভাবে। তবে ধান কাটা মাড়াই শ্রমিকদের ধান কেটে ২০০ কোটি টাকা করতে কৃষি শ্রমিক পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দিন হাজিরায় ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। মিঠাপুকুরের কৃষক হাবিবুর রহমান, আশরাফুল, রংপুর সদরের পশুরাম ইউনিয়নের আমিন, মনটু মিয়া গঙ্গাচড়ার গান্নারপাড় এলাকার মিজানুর, নীলফামারীর জলঢাকার অলিয়ার মিয়াসহ কয়েকজন কৃষকের সাথে এই প্রতিবেদক কথা বলে জানা গেছে, হাট বাজারগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির বোরো ধান কেনা বেচা হচ্ছে ৮শ থেকে প্রায় ৯০০ টাকা।
কৃষকরা জানান, ৫ বছর আগেও ১ একর জমির ধান কাটা মাড়াই করতে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা লাগত। এক দোন (২৪ শতক) জমির ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে কৃষকদের খরচ হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা। সেই হিসেবে প্রতি একরে খরচ পড়ছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। অপরদিকে, দিন হাজিরায় যেসব শ্রমিক কাজ করত তাদেরও মজুরি বেড়েছে কয়েকগুণ।
৫ বছর আগে দেড়শ টাকায় যে শ্রমিক দিন হাজিরায় কাজ করত এবার তারা ৫০০ টাকার নিচে কাজ করছে না। কোন কোন স্থানে তিন বেলা খাওয়াসহ এই হাজিরা পাচ্ছেন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুরে প্রায় ১০ লাখ, নীলফামারীতে ৫ লাখ, লালমনিরহাটে ৪ লাখ, গাইবান্ধায় ৬ লাখ, কুড়িগ্রামে ৭ লাখ, দিনাজপুরে ১২ লাখ, ঠাকুরগাঁয়ে ৭ লাখ, পঞ্চগড়ে ৩ লাখ বৃষি শ্রমিক রয়েছে।
এরা শুধু আমন ও বোরো মৌসুমে ধানা কাটা মাড়াইয়ের কাজ করেন। অন্য সময়ে এরা শহরে রিক্সা, ড্যান অথবা অন্য কোন পেশা গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল এর সাথে মুঠো ফোনে এই প্রতিবেদক কথা বললে তিনি জানান, এবার বোরোর ভাল ফলন হয়েছে।