কৃষি ও অর্থনীতি ডেক্সঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ইউটিউব দেখে সৌদি আরবের খেজুর চাষে সফল হয়েছেন মোশাররফ হোসেন (৩৪)। আমের ব্যবসায় লোকসান করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। এখন তার খেজুর বাগানের পরিধি প্রায় ১০ বিঘার বেশি। এ বছর ১৫ লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা করছেন তিনি।
জানা যায়, উপজেলার দায়পুকুরিয়া ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের ইনসান আলীর ছেলে মোশাররফ হোসেন ২০১৯ সালে ১৩০০ গাছ লাগানোর মধ্য দিয়ে বাগান শুরু করেন। এখন তার খেজুর বাগানে গাছের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। প্রথমে এলাকাবাসী উপহাস করলেও গত ২ বছর ধরে খেজুরের ফলন দেখে অবাক। তার বাগানে ঝুলছে আজোয়া, মরিয়ম, দাবাস, বারিহী, চেগিসহ অন্তত ১০ জাতের খেজুর।
মোশাররফ হোসেনের বলেন, ‘আমরা আম চাষ করি। কয়েক বছর লোকসান খেয়ে আমের প্রতি নির্ভরতা কমিয়েছি। অন্য ফল চাষাবাদের চিন্তা করি। এ চিন্তা থেকে ইউটিউব দেখে সৌদি আরবের খেজুর চাষের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। পরিবার সহায়তা না করায় প্রায় ২ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে শুরু করেছিলাম। দুই বছরে খেজুরের ফলন দেখে স্থানীয়রাও উৎসাহ দিচ্ছেন। অনেক দূর-দূরান্ত থেকেও চারা কিনতে আসছে।’
মোশাররফের ভাই শামসুল আলম বলেন, ‘আমের ব্যবসা ছেড়ে খেজুর বাগান করায় মোশাররফকে আমরা উপহাস করেছিলাম। এখন দেখি সে ভালো কাজ করেছে। আমরা আমের ব্যবসা না ছেড়ে এখনো লোকসান গুনছি। এবারও সে ১৫-১৭ লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করবে। আমি মাঝে মাঝে তার বাগান দেখতে আসি। খুব ভালো লাগে।’
স্থানীয় বাসিন্দা গোলম আজম বলেন, ‘মোশাররফের খেজুর বাগানকে প্রথমে গুরুত্ব দিইনি। গত বছর হঠাৎ দেখি থোকায় থোকায় ঝুলছে অন্তত ১০ জাতের খেজুর। আমাদের ওপর অভিমান করে গত বছর একটি খেজুরও বিক্রি করেননি। গ্রামবাসীকে খাইয়েছেন। মোশাররফ দেখিয়ে দিয়েছেন মির্জাপুরের মাটিতেও সৌদি খেজুর চাষ সম্ভব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এই উপজেলায় আম বাগান বেশি। তবে ইউটিউব দেখে ভিন্ন চিন্তা করেছেন মোশাররফ হোসেন। এতে তিনি লাভবানও হচ্ছেন। সৌদি খেজুর লাভজনক হওয়ার পাশাপাশি এতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। পানির সংকট থাকা জেলার বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য সৌদি খেজুর চাষাবাদ সম্ভাবনা বাড়িয়েছে। কৃষি বিভাগ সবসময় মোশাররফের পাশে আছে।