তোফায়েল চৌধূরী মুক্তা,লন্ডন,ইউকেঃ
স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম রূপকার,(আর্কিটেক্ট অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট বাংলাদেশ) নিউক্লিয়াস ও বিএলএফ এর প্রতিষ্ঠাতা , সশস্ত্র মহান জনযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের রাজনৈতিক তাত্ত্বিক ব্যক্তিত্ব সিরাজুল আলম খান দাদাভাই”র স্মরণে ২২শে জুন ২০২৩,বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ছয়টায় লন্ডনের একটি স্থানীয় হলে অনন্য এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়. এই ব্যতিক্ৰমী সভায় ছিল না কোনো সভাপতি, কোন আলাদা মঞ্চও ছিলনা।
খবর বাপসনিউজ।স্মরণসভায় মহাত্মা সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই তাঁর হাসপাতালের শয্যায় যে গানটি বারবার শুনতে চাইতেন সেটি হলো ‘ধন ধান্য পুষ্পে ভরা ‘ এই গান এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে সভার সূচনা করেন তাঁর লন্ডন ও সাইপ্রাসে চিকিৎসাসহ দৈনন্দিন স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শক সকল প্রকার সেবা, দেখাশুনা নিশ্চিত করা এবং লন্ডনে দাদাভাই “র একান্ত আপনজন খ্যাত ডাঃ নাজমা ঝুমা।
মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন যুক্তরাজ্য জেএসডি’র’ সভাপতি ও জেএসডি’র কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আলহাজ ছমীর উদ্দীন। সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই এবং সকল দেশ প্রেমিকগনের আত্মাহুতি ও আত্মত্যাগের জন্য বিশিষ্ট মওলানা আবদুল কুদ্দুস পবিত্র কোরান তেলাওয়াত করেন ও দোয়া মাহফিলের অংশটির দায়িত্ব পালন করেন।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন লন্ডনের অন্যতম গনমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ‘বেতার বাংলা’র সিইও নাজিম চৌধুরী, অন্য প্লাটফর্মে রাজনীতি করলেও লন্ডনের পরিচিত মহলে দাদা ভাই “র অন্যতম একজন আপনজন বলে খ্যাত জাসদ নেতা মতিউর রহমান তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে কথা বলেন।
এডভোকেট শিব্বির আহমেদ বলেন- তাঁর দর্শন দিয়ে তিনি আমাদের জাতীয় জীবনে সবসময় প্রাসঙ্গিক থাকবেন।আইনজীবী নুরুল ইসলাম এমবিই দাদাভাই”র রাজনৈতিক সাহিত্যের মূল্যায়ন করেন।বিশিষ্ট সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন বলেন-দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দাদা ভাইয়ের ভবিষ্যৎবাণী এখন ও আগামীতেও অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলিত হচ্ছে ও হবে।সি
রাজুল আলম খান দাদা ভাই এর রাজনৈতিক জীবন ও দর্শন নিয়ে প্রাণবন্ত বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নিউক্লিয়াস সদস্য সৈয়দ আবদুল মাবুদ। এছাড়াও ক্রয়ডেনের কাউন্সিলর শেরওয়ান চৌধুরী,স্থানীয় কাউন্সিলর সাদ চৌধুরী,দাদাভাই”র স্নেহভাজন তোফায়েল চৌধুরী মুক্তা,লেখক বাবুল তালুকদার,রেদওয়ান খান, সোলায়মান ও বাসদ নেতা গয়াছুর রহমান গয়াছ। উপস্থিত বক্তারা বাংলাদেশে তাঁর চিকিৎসা বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।স্মরণ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন মাহমুদুর রহমান, নারী নেত্রী সৈয়দা সুলতানা শিখা, শাহনুর, নাজিয়া সুমি, মিখাইল সার্চ সহ আরো অনেকেই।
সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই প্রায়শঃ বলতেন “I’m homely but not ordinary.” ফারদিয়া রাজা চৌধুরী, দেওয়ান আশরাফী জয়ন্ত ও মাহের আফরোজ নিশি দাদাভাই”র সাথে কাটানো তেমনই কিছু অসাধারণ পারিবারিক মুহূর্তের একান্ত স্মৃতি চারণ করেন।পৌত্রী ফাইজা ও ফাবিয়া খান বলেন – ‘রাজনীতিবিদ দাদা ভাই সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যেভাবে যোগাতেন ঠিক তেমনি ছেলেমানুষী আনন্দে তাদের দিনগুলো ভরিয়ে রাখতেন।’
স্মরণ সভায় সিরাজুল আলম খান ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন ডাঃ সানাউল্লাহ, জিপি, লন্ডন,প্রফেসর আহমেত ওজগুল ( সাইপ্রাস),ডাঃ মেহমেত ইয়ালসানজিন (সাইপ্রাস ). তাঁরা জানান , তিনি একজন মহান ব্যক্তিত্ব , রাষ্ট্রচিন্তক। তাঁর চিকিৎসার সাথে জড়িত হতে পেরে তাঁরা নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন।
সভার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল স্থিরচিত্র প্রদর্শনী,দাদাভাই”র বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ও দেশাত্মবোধক গান।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বেশকিছু ছবি ,তাঁর লন্ডনে থাকাকালীন বিভিন্ন পরিবারের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো।যা স্মরণ সভায় অনন্য মাত্রা যোগ করে।’যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’ গানটির সাথে সাদেক আহমেদ চৌধুরীর করা দাদার একটি ভিডিও উপস্থিত সকলকেই বেদনা বিধুর করে তোলে।প্রজেকশন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন আশিস মিত্র, সাদেক আহমেদ চৌধুরী ও ডাঃ নাজমা ঝুমা।
সিরাজুল আলম খান দাদাভা”র ভ্রাতুষ্পুত্র পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।মঞ্চ সজ্জা ও সভার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থেকে অনুষ্ঠান সুচারু ভাবে সম্পন্ন করতে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছেন তোফায়েল চৌধুরী মুক্তা।স্মরণসভার সার্বিক তত্ত্বাবধান পরিচালনা করেন ডাঃ নাজমা ঝুমা।স্মরণ সভার পরিকল্পনায় সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ থেকে এলিজা খান, অভিলাষ খান,মোশারফ হোসাইন মন্টু,শ্যামলিমা লিপি (নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র)মিখাইল সার্চ(লন্ডন)।যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন জনের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখেন দাদাভাই” র অন্যতম শিষ্যখ্যাত সিকদার গিয়াসউদ্দিন।আপ্যায়নে ছিলেন “প্রীতি রেস্টুরেন্ট”এর স্বত্বাধিকারী আজমল হোসাইন।
উপস্থিত বক্তারা সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই”র অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার অঙ্গীকার করেন. শেষে এক মিনিট নীরবতা ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে স্বাধীনতার মহাকাব্যের অনন্য চরিত্র সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই”র শোকসভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।