ইসলামীক ডেক্সঃ
রাসুল (সা.) বলেছেন,
لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ، ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلاَّ أَنْ يَسْتَهِمُوا عَلَيْهِ لاَسْتَهَمُوا، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لاَسْتَبَقُوا إِلَيْهِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي الْعَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا
মানুষ যদি আজান ও প্রথম কাতারের সাওয়াবের কথা জানতো এবং লটারি ছাড়া তা লাভের কোন উপায় না থাকতো তবে তারা এর জন্য লটারি করতো। যদি নামাজে দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার ফজিলত মানুষ জানতো, তবে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করতো। ইশা ও ফজরের সওয়াব যদি তারা জানতো, তবে তারা এ দুই নামাজের জন্য হামাগুড়ি দিয়ে হলেও মসজিদে আসতো। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
১. মসজিদে জামাতের প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করার ফজিলত অপরিসীম। তাই নামাজ আদায়কারীদের সব সময় প্রথম কাতারে নামাজ আদায়ের জন্য উন্মুখ থাকা উচিত। যারা দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হতে পারেন, তাদের উচিত প্রথম কাতারে বসা, পেছনে বসে না থাকা। নবিজি (সা.) একবার প্রথম কাতার থেকে পিছিয়ে থাকা সাহাবীদের লক্ষ করে বলেছিলেন,
تَقَدَّمُوا فَأْتَمُّوا بِي، وَلْيَأْتَمَّ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُمْ، لاَ يَزَالُ قَوْمٌ يَتَأَخَّرُونَ حَتَّى يُؤَخِّرَهُمُ الله
তোমরা সামনের কাতারে এগিয়ে আসো এবং আমার অনুসরণ করো, যেন তোমাদের পরবর্তী লোকেরা তোমাদের অনুসরণ করতে পারে। মানুষ পেছনে হটতে থাকলে আল্লাহও তাদের পিছিয়েই দেন। (সহিহ মুসলিম)
২. নামাজের জন্য দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়াও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। নবিজি (সা.) এ ফজিলত লাভের চেষ্টা করতে উৎসাহ দিয়েছেন। সওয়াবের পাশাপাশি আগে মসজিদে উপস্থিত হলে প্রথম কাতারে বসা, জামাতে প্রথম থেকেই শরিক থাকা, নফল আদায় করা যায়, কুরআন তেলাওয়াত করাসহ অনেক আমল ও সওয়াবের কাজের সুযোগও পাওয়া যায়। ফেরেশতারা এমন ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করেন যারা নামাজের জন্য দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হয়। এ ছাড়া মুমিন ব্যক্তি যতোক্ষণ নামাজের অপেক্ষায় বসে থাকে, তা নামাজের ভেতরে থাকাই গণ্য হয় এবং সওয়াব লেখা হতে থাকে।
৩. সবগুলো ফরজ নামাজ জামাতের সাথে আদায়ের ব্যাপারেই যত্নবান হওয়া উচিত। বিশেষত ফজর ও ইশার নামাজের ব্যাপারে গুরুত্ব থাকা ইমান শুদ্ধ হওয়া ও মোনাফেকি থেকে দূরে থাকার লক্ষণ। নবিজি (সা.) বলেন, মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন নামাজ হলো ইশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এই দুই ওয়াক্ত নামাজের সওয়াব সম্পর্কে জানতো, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও মসজিদে আসতো। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
নবিজির এ বক্তব্য থেকে বোঝা যায় মানুষ ইশা ও ফজরে মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের ফজিলত যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পারলে অসুস্থতা থাকলেও মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করতো। তাই আমাদের সবারই প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করার চেষ্টা করা উচিত, অলসতা করে বাসায় বসে থাকা সমীচীন নয়।