ইসলামীক ডেক্সঃ
রমজান মাস আল্লাহর পক্ষ থেকে রোজাদারের জন্য একটি বড় নেয়ামত। পবিত্র এ রমজান মাসের রোজা পালনের মাধ্যমে একজন সাধারণ মানুষ আল্লাহর বন্ধুতে পরিণত হতে পারেন। কেননা নিষ্ঠার সঙ্গে রোজা পালনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব।
রমজানের রোজা পালনের মধ্যে অনেক সওয়াব ও কল্যাণ নিহীত আছে। মৌমাছির মধু সংগ্রহের মতো রমজান মাসে রোজাদার মহান আল্লাহর কাছে রহমত, বরকত, মাগফেরাত ও নাজাত পেয়ে ধন্য হয়। তারাও রমজানের কল্যাণ পেতে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত হয়। রমজানের এমন অনেক দিক রয়েছে যা পালনের মাধ্যমে রোজাদার বিশেষ কল্যাণ পেয়ে ধন্য হতে পারে।
রমজানে দিনের বেলায় রোজা পালন এবং রাতে নামাজ তারাবিহ-তাহাজ্জুদের মাধ্যমে রোজাদার নিজেদের জীবনে পরিবর্তন ঘটাতে পারে। সঠিকভাবে রোজা পালন ও ইবাদত করতে পারলে মহান আল্লাহ তাআলা অবশ্যই রোজাদারকে গ্রহণ করে নেবেন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে বংশ বা আভিজাত্যে কিছু যায় আসে না; বরং মূল হচ্ছে নেক আমল। এই রমজানে রোজাদার যেন তাদের আমলের পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে। এটি আল্লাহ তাআলার কাছে রোজাদারের চাওয়া। তিনিই অনুগ্রহ করে রোজাদারকে রোজা রাখার তাওফিক দান করেছেন। মানুষ যদি চিন্তাভাবনা করে তাহলে দেখতে পাবে যে, আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহরাজির কোনো শেষ নেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
وَ الَّذِیۡنَ جَاهَدُوۡا فِیۡنَا لَنَهۡدِیَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ
‘যারা আমাকে পাওয়ার জন্য রাস্তা তালাশ করে; তারা যদি রাস্তা খুঁজে নাও পায়, আমি আল্লাহ স্বয়ং তাকে রাস্তা দেখিয়ে দেব। নিশ্চয়ই আল্লাহ (সঠিক পথের অনুসন্ধানকারী) সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৯)
এখানে আল্লাহ পাক এটাই বলছেন, যারা আল্লাহ তাআলার দিকে আসার চেষ্টা করে, তিনি তাদের তার দিকে আসার সুযোগ করে দেন। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দিকে আসার পথগুলোর মধ্যে একটি পথ হল রমজানের রোজা। এ রোজাই মুমিন মুসলমানকে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম।
পবিত্র মাস রমজানে আল্লাহ তাআলা একজন মুমিনের জন্য ইবাদত ও কোরআন তেলাওয়াতের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়াকে আবশ্যক করেছেন এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। যেহেতু এ মাসটি অত্যন্ত বরকতের মাস; তাই একজন মুমিনের স্মরণ রাখা উচিত, ছোট খাটো রোগ-ব্যধি ও দুর্বলতার অজুহাত দেখিয়ে, অন্যায় সুযোগ গ্রহণ করে রোজা ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
রমজানের দিনগুলোতে ইবাদতের প্রতি মনোযোগী হওয়া জরুরি। দান-সাদকাতে এগিয়ে যেতে হবে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উত্তম জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তিনি যেভাবে রমজানকে অতিবাহিত করেছেন, করতে বলেছেন ঠিক সেভাবেই আমাদের রমজান অতিবাহিত করার চেষ্টা করতে হবে।
মুমিন মুসলমানের উচিত, রোজাদারের উঠা-বসা, চলা-ফেরা, সর্বোপরি সবার প্রতিটি কথা ও কাজ দ্বারা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম হয় রমজান।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পবিত্র রমজানের অবশিষ্ট দিনগুলোতে আরো বেশি পুণ্যের কাজ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।