আল্লাহর কাছে মর্যাদা ও সওয়াবে নারী-পুরুষের সাম্য

ইসলাম

ইসলামীক ডেক্সঃ

ইসলামে আল্লাহর কাছে মর্যাদার ক্ষেত্রে নারী পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য নেই। ইসলামে কেউ তার লিঙ্গপরিচয়ের কারণে আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হয় না। আল্লাহর কাছে মর্যাদার অধিকারী হওয়ার মানদণ্ড হলো তাকওয়া বা তার আমল। উন্নত আমলের অধিকারী হওয়ার কারণে বহু নারী বহু পুরুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হতে পারে, আবার নিকৃষ্টও হতে পারে। আল্লাহ বলেন,

اِنَّ اَکۡرَمَکُمۡ عِنۡدَ اللّٰهِ اَتۡقٰکُمۡ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیۡمٌ خَبِیۡرٌ

তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত। (সুরা হুজুরাত: ১৩)

কোরআনে আল্লাহ স্পষ্টভাবে নেক আমলের সওয়াবের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা ঘোষণা করেছেন। লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে কারো সওয়াব আল্লাহ কম দেবেন না বা নষ্ট করবেন না। আল্লাহ বলেন,

اَنِّیۡ لَاۤ اُضِیۡعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنۡکُمۡ مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی بَعۡضُکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡضٍ

নিশ্চয় আমি তোমাদের কোনো পুরুষ অথবা নারী আমলকারীর আমল নষ্ট করব না। তোমরা একে অপরের অংশ। (সুরা আলে ইমরান: ১৯৫)

দুনিয়া ও আখেরাতে নারী পুরুষের কাজের সওয়াব ও প্রতিদান সমান হওয়ার ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ বলেন,

مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ هُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَنُحۡیِیَنَّهٗ حَیٰوۃً طَیِّبَۃً وَ لَنَجۡزِیَنَّهُمۡ اَجۡرَهُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ

যে মুমিন অবস্থায় নেক আমল করবে, পুরুষ হোক বা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব। (সুরা নাহল: ৯৭)

আরেকটি আয়াতে আরও বিস্তারিতভাবে বিভিন্ন আমলের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন,

اِنَّ الۡمُسۡلِمِیۡنَ وَ الۡمُسۡلِمٰتِ وَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡقٰنِتٰتِ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الصّٰدِقٰتِ وَ الصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰبِرٰتِ وَ الۡخٰشِعِیۡنَ وَ الۡخٰشِعٰتِ وَالۡمُتَصَدِّقِیۡنَ وَ الۡمُتَصَدِّقٰتِ وَ الصَّآئِمِیۡنَ وَ الصّٰٓئِمٰتِ وَ الۡحٰفِظِیۡنَ فُرُوۡجَهُمۡ وَ الۡحٰفِظٰتِ وَ الذّٰکِرِیۡنَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا وَّ الذّٰکِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا

নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। (সুরা আহজাব: ৩৫)

তবে ইসলামে দায়িত্ব ও কর্তব্যের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের কিছু পার্থক্য আছে। যেমন ইসলামে সংসারের নেতৃত্ব ও ভরণ-পোষণ দেওয়ার আবশ্যিক দায়িত্ব পুরুষের ওপর থাকে। নারীও সুযোগ থাকলে উপার্জন করতে পারে, কিন্তু সংসারের ব্যায়ভার বহন করার আবশ্যিক দায়িত্ব নারীর নয়; যেহেতু সন্তান গর্ভে ধারণ করা, সন্তানকে স্তন্যদান করা, সন্তানের লালনপালন করার মতো কঠিন দায়িত্ব নারীকে পালন করতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *