সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অপহরণের চেষ্টা, জীবনের নাশের হুমকিতে তিনি

জাতীয়

স্টাফ রিপোর্টার:

নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় কামঠানা গ্রামে গত ৩০ অক্টোবর রাতে দৈনিক মানবজমিন এর সাংবাদিক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুনকে তার গ্রামের বাড়ির সামনে রাস্তা থেকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়।

ওই রাতে কিছু অপরিচিত ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই তার আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকে রেখে পালিয়ে যায়।

পালানোর সময় তারা হুমকি দিয়ে বলে, “এবারের মত বেঁচে গেলে, এরপর আর বাঁচবি না।” এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর সাংবাদিক মামুন তৎক্ষণাৎ নড়াইলের লোহাগড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিজের নিরাপত্তার জন্য সাহায্য চান।

তিনি জানান, “আমার জীবনের ওপর প্রতিনিয়ত ঝুঁকি বাড়ছে, আমি এবং আমার পরিবার সবসময় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।” সাংবাদিক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন একজন সাহসী সংবাদকর্মী হিসেবে পরিচিত, যিনি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক সমস্যা, দুর্নীতি, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ও বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে সত্য উদঘাটনমূলক প্রতিবেদন করে আসছেন।

তার ধারাবাহিক সাহসী রিপোর্টিংয়ের কারণে প্রভাবশালী মহল তাকে আগেও হুমকি দিয়েছে বলে জানা যায়। তবে এবার প্রাণনাশের মতো হুমকি পেয়ে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এই ঘটনার বিষয়ে অবহিত এবং জানান যে, পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

তিনি বলেন, “আমরা দোষীদের চিহ্নিত করতে কাজ করছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।” এ ঘটনা স্থানীয় সাংবাদিক সমাজের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

সাংবাদিক সংগঠনগুলো ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। তারা মনে করে, এ ধরনের ঘটনা কেবল সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকেই হুমকির মুখে ফেলছে না বরং গণমাধ্যমের জন্য একটি অশুভ সংকেত।

সাংবাদিকদের মতে, প্রশাসন যদি দোষীদের যথাযথ শাস্তির আওতায় না আনে, তবে ভবিষ্যতে সাংবাদিকরা আরও বড় ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। এ ঘটনার পর স্থানীয় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লোহাগড়া থানার কাছে সার্বিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে এবং পুলিশ প্রশাসনের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে।

সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ, যারা মানুষের জন্য তথ্যের আলোর উৎস হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু তারা যখন নিজেই এমন হামলা ও হুমকির শিকার হন, তখন তা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আঘাত নয় বরং সার্বিকভাবে সমাজের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হলে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বিরতি আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাংবাদিক সমাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *