সুনামগঞ্জ থেকে,আমির হোসেন
সুনামগঞ্জে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের কৃষকরা অনেক পরিশ্রম করে হাওরে সোনালী ফসল ফলান । কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগ কড়া,অতিবৃষ্টি ও আগাম বন্যার কারণে কৃষকদের ধান ঘরে তুলার আগেই কোন কোন বছর তলিয়ে যায়। এই বছর হাওরে এসে খুব ভালো লাগছে বোরো ধানের বাম্পার ফলন দেখে। ইতিমধ্যে হাওরের ৩০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। আমরা আজকে ধান কাটা উৎসবে এসেছি এবং এই বছর ধানের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা থেকে কৃষকরা অনেক লাভবান হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, যে বছর হাওরের ধান হয় সেই বছর সারাদেশের মানুষ হাওরের এই ধান খেতে পারে। আর যে বছর হাওরের ধান তলিয়ে যায় সেই বছর সারাদেশে খাদ্যের সংকট দেখা দেয়। মন্ত্রী আরোও বলেন, এই বছর বন্যা আসার আগেই হাওরের ধান ঘরে উঠে যাবে। ইতিমধ্যে ১ হাজার ধান কাটার মেশিন হাওরে ধান কাটছে তাই আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। স্বাধীনতা পরবর্তী কেবলই আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন সরকার জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় অধিষ্টিত হয়ে দেশ আজ খাদ্য স্বয়ং সম্পূর্ণ,বিশ্বে বাংলাদেশ আব উন্নয়নের একটি রোল মডেল।
কিন্তু বিরোধী দল বিএনপি জামায়াতরা শেখ হাসিনার এই উন্নয়নকে মেনে নিতে পারেনা। তাদের জ্বালা কিভাবে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় এসে লুটপাঠের রাজত্ব কায়েম করবে দেশে হাওয়াভবণ খুলে দেশে জঙ্গীবাদের অভয়াশ্রম তৈরী করতে চান। তিনি বলেন,দেশের মানুষ আর দেশে জঙ্গীবাদ আর আগুন সন্ত্রাস দেখতে চায় না। আগামী ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ও এদেশের মানুষ আওয়ামীলীগকে নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হবে বলে দৃঢ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের দেখার হাওরের বোরো ধান কর্তন শেষে স্থানীয় দেখার হাওর মাঠে কৃষক সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় কৃষক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান,পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম।
এদিকে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, জলাভূমি হাওরে আর কোন সড়ক নির্মাণ করা হবে না, উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে, যেটির কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, প্রকৃতির সাথে লড়াই করে হাওরে ধান ঘরে তুলা সম্ভব নয়, প্রকৃতির সাথে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। তবে হাওরে আর মাটির বাধ নির্মাণ করা হবে না। মন্ত্রী আরোও বলেন, বৈজ্ঞানিক ভাবে গবেষণা করে ফসলের সময়টা ১২০ দিনের জায়গায় যদি ১০০ দিন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা এতে আমরা সফল হবো। এমনকি আগাম বন্যা আসার আগেই হাওরের ধান ঘরে তুলতে পারবে কৃষকরা।
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন,কৃষক বাচঁলে বাংলাদেশ বাচঁবে এই শ্লোগানটি ধারন করেন জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কৃষিবান্ধব সরকার হিসেবে কৃষক শ্রমিক,দিনমুজুরদের অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন সুনামগঞ্জের হাওরের বোরো ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সময়মতো কৃষকরা যেন তাদের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারেন সেজন্য হাওরের ফসল রক্ষা বাধঁ নির্মাণে ২ শত কোটি টাকার উপরে বরাদ্দ দিয়েছেন । তিনি সাংবাদিকদের সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুনের যে ঘটনাটি তা পত্রপত্রিকায় নিউজ দেখেছি এটা তদন্ত হবে এবং তদন্তে প্রমানিত হলে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ,সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড.পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, পানি সম্পদ মন্ত্রনায়নের সচিব নাজমুল হাসান, কৃষি বিভাবের মহা পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ^াস,পুলিশ সুপার এহসান শাহ,কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট,বিএডিসির চেয়ারম্যান কানাডা আওয়ামীলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন,সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নোমান বখত পলিন,শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিতাংশু শেখর ধর,পরিকল্পনামন্ত্রীর পিএস ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাসনাত হোসাইন ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নুর হোসেন,জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম শিপন প্রমুখ।