মাহাবুব আলম, রাণীশংকৈল, (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে শান্তা কমিনিউটি সেন্টারে নব যোগদানকৃত সহকারী শিক্ষকদের বরণ ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে চাঁদা আদায়ের বিষয় নিয়ে কিছু শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জানা গেছে এ উপজেলা মোট ১৫৬ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এদের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (চাকুরীর স্বার্থে) অনেক প্রধান শিক্ষক বলেন সমিতির ফান্ডে অর্থ মজুদ থাকার পরেও তারা প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেছেন।
এছাড়াও সমিতির জমি বন্দবস্থসহ ঘর নির্মাণের নামে প্রতি স্কুলে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা আদায় করলেও বাস্তবে সমিতির জমি ও ঘরের কোন অস্তিস্থ নেই।এ নিয়ে শিক্ষক সমাজে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে মহলবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, এই শিক্ষক সমিতিকে আমরা মানিনা। এরা সমিতির নামে বিভিন্ন কৌশলে টাকা তুলে আর খায়।
এ ব্যাপারে চেংমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, এই সমিতি তাদের নিজের লোকদেরকে বিভিন্ন পদ দিয়ে কুক্ষিগত কমিটি করেছে। সমিতির জমি ও ঘর নির্মাণের নামে তারা স্কুল প্রতি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা চাঁদা তুলেছে। কিন্তু জমি ও ঘরের ব্যবস্থা না করে সমুদয় টাকা লুটপাট করে খেয়ে ফেলেছে।
যার প্রমাণ আজকের অনুষ্ঠানে নব যোগদানকৃত শিক্ষকদের একটি করে রজনিগন্ধার স্টিক ও বিদ্যায়ী শিক্ষকদের একটি করে ক্রেস্ট দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেছে। অথচ আগে বিদায়ী শিক্ষকদের আগের কমিটি জামা-কাপড় ও ক্রেস্ট দিতো। সব টাকা সমিতি লুটপাট করে খাচ্ছে দেখার কেউ নেই। তিনি আরো জানান উপজেলার অর্ধেক স্কুল তাদের এইরকম স্বেচ্ছাচারিতার জন্য আরেকটি শিক্ষক সমিতি করার কথা ভাবছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন চাঁদা তুলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্কুল প্রতি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা করে টাকা চাঁদা তুলা হয়েছে। আমি ১৭ হাজার টাকা খরচ করছি, বাকী সব হিসাব নিকাশ সভাপতি ও সহ সভাপতি জানেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাহিমউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথি বক্তব্য দেন, ঠাকুরগাঁও -৩ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজউদ্দিন আহমেদ। গেষ্ট অব অনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক এমপি ইয়াসিন আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেফালি বেগম, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ও মোবারক আলী প্রমুখ।
আরও বক্তব্য দেন, শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াকুব আলী,সহ সভাপতি কুশমত আলী, প্রধান শিক্ষক রমজান আলী,শিক্ষক সমিতির ভারপ্রান্ত সাধারণ সম্পাদক মোকবুল হোসেন ,অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবুল হাসনাত নুরুল কবির, নব যোগদানকৃত শিক্ষক মিল্টন খন্দকার।
পরে নব যোগদানকৃত ১১৯ জন শিক্ষককে ১ টি করে রজনিগন্ধার স্টিক দিয়ে বরণ ও অবসরপ্রাপ্ত ১০ জন বিদায়ী শিক্ষকদেরকে ১ টি করে ক্রেষ্ট দিয়ে সম্মাননা দেওয়া হয়৷ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারি শিক্ষক দিলারা বেগম৷