সুনামগঞ্জ থেকে,আমির হোসেন
প্রতিদিনই যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করছে একদল বালুখেকোচক্র। উপজেলা প্রশাসনেরও নিয়মিতভাবে চলছে নদীপাড় কাটা রোধে নানান অভিযান। ইজারাদার ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ বিরাজমান। ইজারাদারের পক্ষের লোকজনের বক্তব্য ‘বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের সহায়তায় যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু নিচ্ছে একদল বালুখেকো চক্র। আর বদনাম হচ্ছে আমাদের।
আমরা রাজনীতি করি,ব্যবসা বানিজ্য করি। ৭০ কোটি টাকা সরকারকে খাজনা দিয়ে যাদুকাটা বালু মহাল এনেছি। এ নদী থেকে বালু নিয়ে কেউ ব্যবসা করলে আমরা তাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করি। আমরা কেন নদীর পাড় কাটবো। একটি দুষ্টচক্র যাদুকাটা নদী ১৪৩০ বাংলা সনে ইজারা না পেয়ে বর্তমান ইজারাদারসহ আমাদের নামে নানান অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
এভাবেই এ প্রতিবেদককে জানালেন,বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাদাঘাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহবায়ক আফতাব উদ্দিন। ‘তিনি আরো বলেন,‘বাদাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ একটু সক্রিয় হলে শষ্য পরিমাণ বালু কেউ এখান থেকে নিতে পারতো না।প্রতিদিন তারা যাদুকাটা নদীর পাড় থেকে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় বালুখেকোচক্রদের কাছ থেকে।’
তবে বাদাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই নাজমুল হক বললেন, ‘১৫/১৬ দিন হয়েছে তিনি এখানে যোগদান করেছেন। এলাকায় এসে তিনি যা শুনেছেন,শতাব্দিকাল থেকেই যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করেছে বালুখেকোরা। বর্ষায় এটি এখন সাগরের মতো দেখা যায়। তদন্ত কেন্দ্রে যে পরিমাণ জনবল আছে তা দিয়ে মামলার বিভিন্ন তদন্ত ও গ্রেফতারি পরওয়ানা তামিল করতে হয়। নদীর পাড় কাটার সংবাদ পেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না। তিনি আরো বলেন, মেঘালয় পাহাড়টি যদি বাংলাদেশে পড়তো। তাহলে ঐ মেঘালয় পাহাড়টিকেও কেটে এ এলাকার মানুষ সাগর বানিয়ে ফেলতো। বালুখেকোদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।’
সম্প্রতি প্রতিদিনই যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করছে একদল বালুখেকোচক্র। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের লোকজন তাদের নিজের জমি দাবী করে তারা নিজেরাই সরজমিন উপস্থিত থেকে ব্যবসায়ীদের নিকট বালু বিক্রি করছে।
ঘাগটিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ঘাগটিয়া আদর্শগ্রাম ও জালরটেকে কোন জমি নাই। ওখানে সরকারের খাস জমি যাদের দখলে আছে তারাই এ জমি নিজেদের দাবী করে নিজে উপস্থিত থেকে বালু বিক্রি করে তারা কোটি টাকার মালিক হচ্ছে।’
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, নদীর পাড় কেটে যারা বালু ক্রয় বিক্রয় করে তারা সবাই সমঅপরাধী। ঘটনাস্থলে গেলে কাউকে পাওয়া যায়না। আজও সহকারী কমিশনার(ভূমি)কে পাঠানো হয়েছে অভিযান চালানোর জন্য।