ফরিদপুর প্রতিনিধি-
ফরিদপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার পর দোকানে বসে কলা খাচ্ছিলেন রব মিয়া (৭০) নামের এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে খবর পেয়ে শহরের কমলাপুরের লালের মোড় থেকে রব মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, দোকানে বসে রব মিয়ার কলা খাওয়ার ভিডিও ফেসবুকে দেখতে পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে কমলাপুর লালের মোড় এলাকার একটি বাড়িতে বড় ভাই রাজা মিয়ার স্ত্রী মাজেদা পারভিনকে (৬৩) চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন রব মিয়া। এ ঘটনায় রব মিয়াকে একমাত্র আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে রুহুল আমীন।
রুহুল আমিন (২২) বলেন, ‘চাচা রব মিয়া ২২ শতাংশ জমি বিক্রি করেন আমাদের কাছে। অনেক আগেই তার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি আবারও কিছু টাকা দাবি করেন। দিতে না পারায় হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মাকে হত্যা করেন।’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার বাসিন্দা রাজা মিয়ার (৭৫) বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী মাজেদা পারভিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন রব মিয়া। পরে চাপাতি পুকুরে ফেলে পালিয়ে যান।
রাজা মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া আছিয়া বেগম (৫৫) বলেন, ‘হঠাৎ আর্তচিৎকার শুনে এসে দেখি বাড়িওয়ালার স্ত্রীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে বিছানায় ফেলে রেখেছে। পরে আমার চিৎকার শুনে অন্যরা আসে।’
রাজা মিয়া বলেন, ‘আমি নামাজ পড়ছিলাম। ঘরের সামনে এসে আমাকেও চাপাতি দিয়ে কোপাতে যায় রব। তখন আমি ঘরের সিটকিনি মেরে বাঁচি। পরে চলে যাওয়ার সময় পুকুরে চাপাতি ফেলে যায় রব।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৈতৃক সম্পত্তিতে বাড়ি বানিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন রাজা মিয়া। তার ছোট ভাই রব মিয়া তাদের পাশেই থাকেন। পাঁচমাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে রব মিয়ার স্ত্রী অনেক আগেই তাকে ছেড়ে চলে যান। সেই থেকে তিনি একাই থাকেন। তাদের আরও একজন ছোট ভাই ছিলেন যিনি আগেই মারা গেছেন। ওই ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী ও তার পরিবারও পাশেই থাকেন। সম্পত্তি বেচাকেনা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর বুধবার দুপুরে একটি ভিডিও পোস্ট করেন মুন্সি হাবুল জোবার্গার নামের এক ব্যক্তি। সেখানে বেলা ১১টার দিকে রব মিয়াকে দোকানে বসে কলা খেতে দেয়া যায়। ভিডিওতে পালাওনি কেন জানতে চাইলে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘ওই ব্যাটা, আমি খুন করছি, পলাবো ক্যা?। পলাবো না। আমি শাহেনশাহ।’
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি এম এ জলিল বলেন, পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। দুপুরে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।