সুনামগঞ্জ থেকে,আমির হোসেন
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দিঘলবাক গ্রামে মেয়ের জামাই ও তার ২ সহোদরের হাতে খুন হয়েছেন বৃদ্ধ শ্বশুর।
নিহতের নাম মো. আব্দুল মোতালেব(৫৫)। তিনি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের দিঘলবাক গ্রামের মৃত ছমেদ আলীর ছেলে। সাথে সাথেই স্বজনরা লাশ ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। লাশের ময়না তদন্ত শেষ করে লাশ যখন তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তখনই এলাকার লোকজনের উপস্থিতিতে এক হৃদয় বিধারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
মঙ্গলবার ভোররাতে উপজেলার পাশ্ববর্তী সলুকাবাদ ইউনিয়নের মথুরকান্দি গ্রামের মৃত রইছ মিয়ার ছেলে মো.আব্দুস ছাত্তার ও তার আপন দুই সহোদর আব্দুল কদ্দুছ ও আব্দুল খালেক মিলে দিঘলবাক গ্রামে গিয়ে শ্বশুর বাড়ির বসতঘরে প্রবেশ করে শ্বশুর মো. আব্দুল মোতালেবের গলা চেপে ধরে দাড়াঁলো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে তাকে হত্যা করে মোটর সাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাদের ধাওয়া করলে ও হত্যাকারীদের আটক করতে পারেননি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়,আনুমানিক ২০১২ সালে মথুরকান্দি গ্রামের মৃত রইছ মিয়ার ছেলে মো. আব্দুস ছাত্তার একই উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের দিঘলবাক গ্রামের মো. আব্দুল মোতালেব এর মেয়ে আখলিমা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ে পর তাদের সংসারে ৪টি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহন করে এবং আখলিমা বর্তমানে আবারো ৭ মাসের অন্তসত্তা বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী আব্দুস ছাত্তার এক নারীর সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এতে তার স্ত্রী আখলিমা খাতুন দেখে ফেলায় স্বামীকে বিভিন্নভাবে পরকিয়া থেকে ফিরিয়ে আসতে বাধা প্রদান করায় তার উপর চলে শারীরিক নির্যাতন।
এভাবে স্ত্রী আকলিমা খাতুনের উপর নির্যাতনের স্ট্রীমরোলার চলতে থাকে। এক পর্যায়ে গত এক সপ্তাহ পূর্বে স্ত্রী আকলিমা খাতুনকে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে আকলিমা নিরুপায় হয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন।
এই পরকিয়ার ঘটনায় বাধা দেয়ার কারণেই মেয়ের জামাই আব্দুস ছাত্তার ও তার দুই সহোদর আব্দুল কদ্দুছ ও আব্দুল খালেক ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুর আব্দুল মোতালেবকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় বলে জানান নিহতের মেয়ে আকলিমা খাতুন। এ ঘটনার পরপরই খুনীরা বাড়ি ছেড়ে এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে এলাকো ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. আব্দুস ছাত্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনেটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম হত্যাকান্ডের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেছে এবং মামলা দায়েরের পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।