সুনামগঞ্জ থেকে,আমির হোসেন:
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার রণজয় চন্দ্র মল্লিক ও ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে পুলিশি তৎপরতায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একটি চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে ছাতক থানা পুলিশ। গত (শুক্রবার ৬ অক্টোবর) হত্যা মামলার মূল আসামি রবিউল হাসান (১৯), পিতা-মশাহিদ আলী, সাং-দক্ষিণ কূর্শী, থানা-ছাতক, জেলা-সুনামগঞ্জকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় দক্ষিণ কূর্শী গ্রামের আতাউর রহমানের ধান ক্ষেতে মাথাবিহীন অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় ইভা বেগম (১০) নামের এক শিশুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনার শিশুটির পিতা মোঃ মশাহিদ আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
শিশুটির ভাই রবিউল হাসানের কথা বার্তায় সন্দেহজনক মনে হলে তাকে নিবিড়ভাবে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় সে তার বোন ইভাকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। আসামি রবিউল হাসানসহ দক্ষিণ কূর্শী গ্রামের লিকসন আক্কল মিয়া ও হোসেনগণ একই গ্রামে একটি হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন।
জামিনে মুক্ত হয়ে রবিউল, হাসান, লিকসন,আক্কলসহ একই গ্রামের আহমেদ আলী (৩৮), মুজিব (৪২) ও লিটন মিলে খুন মামলাটি সহজে আপোষ মীমাংসা করার জন্য আরেকটি খুন করে পূর্বের খুন মামলার বাদি পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করেন।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ অক্টোবর রবিউল হাসান তার ছোট বোন ইভাকে মোবাইলের মিনিট কার্ড আনার জন্য গ্রামের একটি দোকানে পাঠায়। মিনিট কার্ড কিনে দোকান থেকে বাড়ি আসার পথে আসামিগণ শিশু ইভাকে আক্কলের বাড়িতে নিয়ে যায়। আসামিরা শিশু ইভার মুখ, মাথা ও পা চেপে ধরে একটি রামদা দিয়ে ঘাড়ে কোপ মেরে মাথা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে।
পরবর্তীতে আসামিরা ছুরি দিয়ে শিশু ইভার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করে। আসামিরা শিশু ইভার দেহ আতউর রহমানের ধান ক্ষেতে এবং মাথা লিটনদের জমিতে ফেলে রেখে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামি রবিউল হাসানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল ৬ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে শিশু ইভার মাথা লিটনদের জমি থেকে উদ্ধার করা হয়।
শিশু ইভা বেগমকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আসামি রবিউল হাসান বিজ্ঞ আদালতে ফৌ: কা:বি: ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করে। আসমিকে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক আসামিদেরকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। ঘটনাস্থলে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করে দ্রুত অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশনা প্রদান করেন।