স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ এ বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত সহকারী শিক্ষা অফিসার সীমান্ত কুমার বসাক।
বিভাগীয় পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা পদক বাছাই কমিটি, বিভিন্ন পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করার জন্য বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
সীমান্ত কুমার বসাক ২০১৩ সালে সহকারী শিক্ষক পদে দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার চাঁদগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম যোগদান করেন এবং বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে ২০১৭ সালে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় যোগদান করেন।
২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে সরাসরি কাজ করে চলেছেন। এ পদে যোগদান করার পর থেকেই নিজের কর্মদক্ষতায় সবার কাছে হয়ে উঠেছেন গ্রহণযোগ্য প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং সরকারি বিভিন্ন কার্যক্রমে দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলায় তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সহিত চাকুরী করে আসছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার লক্ষ্য প্রাথমিক পর্যায়ে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং শিশুদের সার্বিক বিকাশে একান্তভাবে কাজ করে ডিজিটাল তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। যাতে শিশুরা যোগ্য, দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
তিনি করোনাকালীন সময়ে ক্লাস্টার ভিত্তিক মেসেঞ্জার গ্রুপ তৈরি করে সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সাথে সক্রিয় যোগাযোগ, গুগল মিটের মাধ্যমে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক দিয়ে শ্রেণী পাঠদান পরিচালনা এবং এলাকাভিত্তিক গ্রুপ তৈরি করে অনলাইন ক্লাস চালু করেন। শিক্ষক ও অভিভাবক কে অনলাইনে যোগাযোগে উদ্ভুদ্ধ করেন।
শিক্ষকদের সাথে নিয়ে এলাকাভিত্তিক শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওয়ার্কশীট বিতরণ এবং হোম ভিজিট করেন। এছাড়া করোনা পরবর্তী সময়ে এবং বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রতিটি বিদ্যালয় কে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে তুলেন।
শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের শতভাগ উপস্থিতি করণকল্পে ক্লাস্টারের সকল বিদ্যালয়কে আকর্ষনীয়ভাবে সজ্জিতকরণ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা সহ মাঠে সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছেন ।
নিজ উদ্যোগে প্রতিটি বিদ্যালয়ে বৃক্ষ বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, ফুলের বাগান তৈরি,এলাকাবাসীর উদ্যোগে শহীদ মিনার তৈরি, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ টাইলসকরণ,পতাকা বেঁধি তৈরিসহ নানাভাবে বিদ্যালয় কে শিশুবান্ধব ও আকর্ষণীয় পরিবেশ দানে কাজ করে চলেছেন।
শিশুদের বিজ্ঞানমনস্ক করতে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষকদের সরাসরি প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিভিন্ন সময়ে অনলাইন জুম সভার মাধ্যমে শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। অভিভাবক, এস.এম.সি., পি.টি.এ. ও সমাজের সচেতন মানুষদের বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করে সক্রিয়ভাবে কাজ করা, শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্ক, শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়ন,মা সমাবেশে অংশগ্রহণ এবং দৈনিক সমাবেশে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের শুদ্ধাচার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার জন্য কাজ করে আসছেন।
এ ছাড়াও শিক্ষকদের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান,ডিজিটাল কনটেন্ট এর মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান গ্রহণসহ বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম মনিটরিং এ সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের রিডিং দক্ষতা বৃদ্ধি ও সহজে শিখনফল অর্জনের জন্য বই প্রকাশসহ বিভিন্ন ইনোভেশনের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।
বিচারক মন্ডলীসহ সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে সীমান্ত কুমার বসাক বলেন, আমি রংপুর বিভাগের শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আমি কোমলমতি শিশুদের জন্য কাজ করে চলেছি এবং ভবিষ্যতে এ ধারা যেন অব্যাহত রাখতে পারি তার জন্য সকলের কাছে আশীর্বাদ ও দোয়া প্রার্থী।