জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভোটদানে বাধা এলে প্রতিহতের আহ্বান সিইসির

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভোটদানে বাধা এলে প্রতিহতের আহ্বান সিইসির

জাতীয়

রাজশাহী টাইমস ডেক্সঃ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মতপার্থক্যের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। পাশাপাশি ভোট দিতে বাধার সম্মুখীন হলে একক বা সামষ্টিকভাবে তা প্রতিহত করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তফসিল ঘোষণাকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ভোটকেন্দ্রের পারিপার্শ্বিক শৃঙ্খলাসহ প্রার্থী, ভোটার, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও সর্বসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে কোনো মূল্যে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করতে হবে।’

ভোটারদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা আগামী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে, উৎসাহ- উদ্দীপনা, সাহস ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে নির্বিঘ্নে, স্বাধীনভাবে আপনাদের মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করে সংসদ ও সরকার গঠনে নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন।

ভোট আপনার, ভোট প্রদানে কারও হস্তক্ষেপ বা প্ররোচনায় প্রভাবিত হবেন না। কোনো রকম হস্তক্ষেপ বা বাধার সম্মুখীন হলে একক বা সামষ্টিকভাবে তা প্রতিহত করবেন। প্রয়োজনে অবিলম্বে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করবেন। প্রিসাইডিং অফিসার যে কোনো মূল্যে যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করে ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আইনত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও বাধ্য।’

সংঘাত পরিহার করে সমস্যা সমাধানে সব রাজনৈতিক দলকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য কাঙ্ক্ষিত অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন প্রশ্নে, বিশেষত নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতির প্রশ্নে, দীর্ঘসময় ধরে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক নেতৃত্বে মতভেদ পরিলক্ষিত হচ্ছে। বহুদলীয় রাজনীতিতে মতাদর্শগত বিভাজন থাকতেই পারে।

কিন্তু মতভেদ থেকে সংঘাত ও সহিংসতা হলে তা থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব বিস্তার করতে পারে। মতৈক্য ও সমাধান প্রয়োজন। আমি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক দলকে বিনীতভাবে অনুরোধ করবো, সংঘাত ও সহিংসতা পরিহার করে সদয় হয়ে সমাধান অন্বেষণ করতে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণকে অনুরোধ করবো সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে সব দলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সর্বদা স্বাগত জানাবে। পারস্পরিক প্রতিহিংসা, অবিশ্বাস ও অনাস্থা পরিহার করে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা ও সমাধান অসাধ্য নয়। পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা, সহনশীলতা ও সহমর্মিতা টেকসই ও স্থিতিশীল গণতন্ত্রের জন্য আবশ্যকীয় নিয়ামক।’

হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন করতে হবে। নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত সব কর্মকর্তাকেও আইন ও বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুধাবন, প্রতিপালন ও প্রয়োগ করে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আরোপিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন বিষয়ক আইন ও বিধি-বিধান তাদেরকে অবহিত করার লক্ষ্যে কমিশন বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে এবং করে যাচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *