সুনামগঞ্জ থেকে আমির হোসেন:
বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির কারণে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ শফিউল আলম ও জেলার মোঃ: হুমায়ূন কবির পরেছেন কারা রক্ষীদের তোপের মুখে। চলমান ছাত্র আন্দোলনের কারনে এক দিকে যেমন সরকারের পতন ঘটেছে ,সেই সাথে সাধারণ পুলিশ সদস্যরা ও তাদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন দেশ জুড়ে। বিভিন্ন থানা ও জেলা কারাগারের জেল রক্ষীরা ও তাদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে চলেছেন।
তারই অংশ হিসেবে এবার সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার ও জেলারসহ দূর্নীতিবাজদের সকল অনিয়ম দুর্নীতির কাল মোখষ খুলে দিতে শুরু করেছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাধারণ সদস্যরা। এবার জনগণের সামনে ফুটে উঠেছে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের তেমন চিত্র। জেল সুপার ও জেলারের নানান অনিয়মের কারনে সাধারণ কারা রক্ষীরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে বাধা গ্রস্থ হচ্ছেন এমনটির চিত্র এবার ফুটে উঠেছে।
কারা রক্ষীদের স্বাধীনতা জিম্মি করে অনিয়মের কায়েম রাজত্ব গড়ে তুলেছেন জেল সুপার মোহাম্মদ শফিউল আলম ও জেলার মোঃ হুমায়ূন কবির।
আসামিদের খাবারের খাদ্য পন্যের বরাদ্দকৃত সরকারের টাকা আত্মসাৎ, দিগুন দামে পণ্য বিক্রি, কারা রক্ষীদের কাছ থেকে ঘোষ নেওয়া ,বদলী বাণিজ্য , মহিলা কারারক্ষীদের অসামাজিক কার্যকলাপের কুপ্রস্তাব, পুরাতন আসবাবপত্র রাখার গোডাউনে সাধারণ কারা রক্ষীদের থাকার জায়গা করে পানিশমেন্ট দেওয়াসহ আসামিদের প্রতি অন্যায় অবিচার করা,জেল খানার ভিতরে মাদক আদান-প্রদান করা।
ঐ সমস্ত কার্যকলাপ সাধারণ কারা রক্ষীদের মন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সেনাবাহিনীর কাছে দেশ হস্তান্তর করার পর পরই ফুটে উঠতে শুরু করেছে প্রত্যেকটি সেক্টরের বড় বড় অফিসারের অনিয়মের কাল চিত্র। এবার সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের দূর্নীতিবাজ জেল সুপার ও জেলার পরেছেন কারা রক্ষীদের তোপের মুখে।
তাদের বিরুদ্ধে কারা রক্ষীরাই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। এমনকি জেল সুপার ও জেলারকে গণ ধোলাই দিয়ে জেলখানা থেকে বের করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন সাধারণ কারা রক্ষীরা।ঐ জেল সুপার ও জেলার কে দ্রুত এখান থেকে না সরালে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছেন কারা রক্ষীরা। ৯আগষ্ট শুক্রবার রাতে জেলা কারাগারের সকল কারা রক্ষীরা এক হয়ে জেল সুপার ও জেলারের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েন ।
এক সময় কারা রক্ষীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে, কারা রক্ষীরা জেল সুপার ও জেলারের প্রতি ক্ষিপ্ত হন এবং গণ ধোলাই দেওয়ার প্রস্তুতি নেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিক ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হলে কারা রক্ষীরা সাংবাদিকদের কাছে জেল সুপার ও জেলারের সকল অনিয়ম দুর্নীতিসহ আসামিদের কাছ থেকে ঘোষ নেওয়াসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের সকল তথ্য তুলে ধরেন। এবং জেল সুপারের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে জেল খানার ভিতরে জেতে নিষেধ করেন। এবং ১১দফা দাবিতে কর্মবিরতি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
জেলা কারাগারে এমন ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও উপস্থিত হন। সেনাবাহিনীর সুনামগঞ্জ জেলার দায়িত্বরত লে: কর্ণেল নাফিজ ইন্তিয়াজ ও ডিসির প্রতিনিধি মিলে সকল কারা রক্ষীদের বুঝিয়ে তাদের সাথে কথা বলে সকল অনিয়ম দুর্নীতির কথা নোট করে নেন।
এবং তদন্ত করে দূর্নীতি বাজ জেল সুপার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এসময় সকল কারা রক্ষীদের তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করেন।
পরে দূর্নীতিবাজ জেল সুপারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেনাবাহিনীর গাড়িতে তুলে অনত্র নিয়ে যান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে রাত ১টার দিকে তাকে কোয়াটারে হেফাজতে পৌঁছে দিয়ে আসেন। এব্যাপারে জেল সুপারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের ক্যামেরায় কোন কথা বলতে রাজি নন বলে জানান।