নিজস্ব প্রতিবেদক :
নওগাঁয় সুলতানা জেসমিনকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদে জড়িত র্যাব সদস্যদের মাঠের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। গত সপ্তাহে আটকের পর হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যু হলে নির্যাতনের অভিযোগ তোলে পরিবার। মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্টও বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন।
এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জেসমিনকে আটকের সঙ্গে জড়িত র্যাব সদস্যদের ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২২ মার্চ ওই অভিযানে যারা ছিলেন সেই ১১ জনকে সরিয়ে র্যাব-৫ এর ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে সংযুক্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে। ওই ১১ জনের মধ্যে একজন মেজর, পুলিশের এএসপিসহ অন্যান্য সদস্য ও গাড়িচালকও রয়েছেন।
র্যাবের মুখপাত্র আরও জানান, ওই ঘটনা তদন্তে র্যাব সদর দপ্তর গঠিত কমিটি এখন রাজশাহীতে অবস্থান করছে। কমিটি এ অভিযানে যুক্ত প্রত্যেক র্যাব সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের অভিযোগে গত ২২ মার্চ নওগাঁ থেকে র্যাব আটক করে ভূমি অফিসের কর্মী জেসমিনকে। আটকের চার ঘণ্টা পর তাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান র্যাব সদস্যরা। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। পরিবারের অভিযোগ, র্যাবের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে র্যাব বলছে, ৪৫ বছর বয়সী ওই নারীকে আটকের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
র্যাব হেফাজতে মৃত্যুর এ ঘটনায় হাইকোর্ট জেসমিনের লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছেন। র্যাবের কে কে জিজ্ঞাসাবাদে ছিলেন, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
এদিকে জেসমিনকে আটকের পর তাকেসহ আরও এক তরুণকে আসামি করে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এনামুল।
এক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, যখন তাকে ধরা হয় তখন তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার আগে তার মৃত্যু হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে তার মৃত্যুর পরের দিন। তাহলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখানে অপব্যবহার করা হয়েছে। এই মামলায় প্রসিড করা হয়নি। কিন্তু আমার কথা হলো, এই আইন দিয়েই ওই নারীকে ধরা হয়েছিল।