শিকদারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার নামে হয়রানী ও প্রতারণা'র অভিযোগ

শিকদারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার নামে হয়রানী ও প্রতারণা’র অভিযোগ

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার:

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শিকদারী ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়মবহির্ভূত সেবা প্রদানের নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা ও হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী রোগী ও তার স্বজনদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করলে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ অব্যবস্থাপনা ও নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনার চিত্র।

সরেজমিনে দেখা গেছে , রিসিপশনের পাশে হাতে লেখা বিভ্রান্তিকর মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সকল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীকে সেবার মূল্য পরিশোধের রশিদ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়না এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। মূল্য তালিকার রশিদ চাইলে রোগিদের সাথে চরম দূব্যবহার ও ধমক দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, শিকদারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রিসিপশন ডেস্কে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন কর্মচারী নেই। তার বদলে সেখানে ওষুধ কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধিকে কাজ করতে দেখা যায়। উপরন্তু প্রতিষ্ঠানের মালিক ডাঃ মোঃ আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিম্নমানের ওষুধ লেখার অভিযোগ পাওয়া যায় একাধিক দোকানীর কাছে থেকে। দোকান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোকানীরা বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ডাক্তার লেখে বলেই নিম্নমানের পট ও সিরাপ দোকানে রেখে চড়া দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন তারা।

বিষয়টি তাদের জন্য বিব্রতকর বলে উল্লেখ করেন একজন ওষুধ বিক্রেতা। নিম্নমানের এই ঔষধগুলো রোগীদের বার বার প্রেসক্রাইব করেন ডাক্তার আরিফুল। যে ওষুধ খেয়ে রোগী সুস্থতার চেয়ে অসুস্থ বেশি হচ্ছে এমন কথাও শোনা গেছে। প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে যে ধরনের অনিয়ম দেখা গেছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, সিটিজেন চার্টের চেয়েও অধিক টাকা নেওয়া হয় রোগীদের কাছ থেকে।

এক্সরের পারমশিন ও রেডিওগ্রাফার না থাকলেও স্টোর রুমের আড়ালে এক্সরে করা হয় ওই সেন্টারে। আবার ওই এক্সরে মেশিন টি নিম্নমানের পুরাতন এনালগ হলেও টাকা নেওয়া হচ্ছে ডিজিটালের সমান। উন্নত ব্যবস্থাপনা নেই ল্যাবে। ছোট খাটো দু-একটি যন্ত্রপাতিতেই চলে সব কাজ। উল্লেখ্য, এই ক্লিনিকে রক্তের সিবিসি পরীক্ষার কোন মেশিন না থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ভু’য়া সিবিসি রিপোর্ট।

এর বিনিময়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা । আবার ব্যাপক অব্যবস্থাপনা নোংরা ও দূর্গন্ধে ভরা এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার। শিকদারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ফ্লোরে ঢুকতেই দেখা যায় অসংখ্য ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বাথরুম গুলোরও বেহাল দশা। এভাবেই চলছে শিকদারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর অবৈধ কার্যক্রম। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট অবিলম্বে অব্যস্থাপনার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতারনা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ডাঃ আরিফুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম রাব্বানী বলেন, শিকদারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নানান অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে তারাও কিছুটা অবহিত। সেখানে মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *