মোঃ ইসরাফিল হোসেন:
রাজশাহী আঞ্চলিক কর অফিসে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ উপ-কর পরিদর্শক মহিবুল ইসলাম ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সদস্যরা। এ কর অফিসের কর্মচারিদের সঙ্গে দুদক কর্মকর্তাদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। খপর পেয়ে রাজপাড়া থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মহানগরীর ভেড়িপাড়া এলাকায় কর অফিসে এই অভিযান চালানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘন্টা ব্যাপী এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী বিভাগীয় অফিসের উপ-পরিচালক কামরুল আহসান।
কর অঞ্চল রাজশাহীর কর কমিশনার শাহ্ আলী বলেন, কর অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরেদর ওয়ার্কশপ চলছিলো। এই সময় তারা জানতে পরে উপ-কর পরিদর্শকের রুমে ঢুকে ভেতর থেকে ছিটকানি দিয়ে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক উপ-কর পরিদর্শক মহিবুল ইসলাম ভূইয়াকে মারধর করছে।
মহিবুল ইসলাম ভূইয়া বাঁচাও বলে চিৎকার করে। তার চিৎকার শুনে অফিসের কর্মচারীরা দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। এসময় তাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তি হয়।
কর কমিশনার শাহ্ আলী আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট কি অভিযোগ তা বলতে পারবো না। তবে জানতে পেরেছি ডা: ফাতেমা সিদ্দিকা নামের এক চিকিৎসকের সম্পদের ২৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির একটি ফাইল ছিলো মহিবুল ইসলামের কাছে। সেটি নিয়ে কাজ করছিলেন তিনি।
গ্রেপ্তারের পর উপ-কর পরিদর্শক মহিবুল ইসলাম ভূইয়াকে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমি অফিসের বাইরে ছিলাম তখন ডা: ফাতেমা সিদ্দিকা অফিসে ঢুকে টাকাগুলো ড্রয়ারে রাখছে। এই সময় দুদকের লোকজন ধস্তাধস্তি করে রুমে ঢুকিয়ে দরজা আটকিয়ে আমাকে মারধর করে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক কামরুল আহসান বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিলো ডা: ফাতেমা সিদ্দিকার সম্পদের উচ্চমূল্যে কর নির্ধারণ করার হুমকি দিয়ে আসছিলেন মহিবুল ইসলাম । এক পর্যায়ে কর অঞ্চলের উপ-কর পরিদর্শক মহিবুল ইষলাম ভূইয়া ৬০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। সর্বশেষ ডা: ফাতেমা সিদ্দিকার সাথে ৫০ লক্ষ টাকায় রফাদফা হয়। সেই রফাদফার প্রথম কিস্তির ১০ লক্ষ টাকা দিতে গিলে আমরা হাতে নাতে গ্রেপ্তার তাকে গ্রেপ্তার করি।
তিনি বলেন, প্রায় পাঁচ ন্টা ব্যাপি উপ-কর পরিদর্শক মহিবুল ইসলাম ভূইয়া দপ্তরে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদসহ বিভিন্ন নথিপত্র এবং তার ড্রায়ার থেকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
চিকিৎসক ফাতেমা সিদ্দিকা মাদার্সল্যান্ড ক্লিনিকের মালিক ও ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের সহকারি অধ্যাপক। এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য মুঠোফোনে কল করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। সাদেকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ফোন ধরে বলেন, ম্যাডাম ইমারজেন্সিতে আছেন। পরে কথা বলেন।