মোঃ মিঠু আহম্মেদ, পুঠিয়া ( রাজশাহী) প্রতিনিধি:
আজ সোমবার সকাল থেকেই শুরু হচ্ছে কার্তিকপাড়ার ঐতিহ্যবাহী ঢেপরতোলার মেলা।
এই মেলা মুলত হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বহন করে আসছে প্রায় দেড় শ বছর ধরে।
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলা সদর হতে ১৩ কিঃ উওরে পুঠিয়া তাহেরপুর রোড, কার্তিকপাড়া গ্রামে প্রতিবছর জৈষ্ঠ্যমাস ১ এবং ২ তারিখকে কেন্দ্র করে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সেই মোতাবেক এবছরের মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ ১৫ ও ১৬ মে রোজ সোমবার ও মঙ্গলবার ।
মেলাটি ২ দিন হলেও মুল মেলা হবে, সোমবার দিনব্যাপী। পরের দিন মঙ্গলবার আংশিক মেলা।
এ মেলার বড় আকর্ষন হলো বিভিন্ন রকম ছোটো, বড় ঘুড়ি , নানান স্বাদের দই মিষ্টি, জিলাপি, চিনির তৈরী হাতি ঘোড়া আকৃতির সন্দেশ ,কাঠ ফার্নিচারের সামগ্রী।

এছাড়াও এই মেলাই বিভিন্ন রকম ফল কেনাবেচা ঢল নামে, যেমন, আম কাঠাল,লিচু, তরমুজ ইত্যাদি। হরেক রকম খেলনা,শীতল পাটি,বেত বাঁশের তৈরী গৃহস্থালি জীবনের নানান পণ্য।
মেলাটির ইতিহাস সন্ধানে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় দেড়শ বছর আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুগামীরা কালির শরনে এবং নিজ নিজ কল্যাণ কামনা সর্ব প্রথম মেলাটির আয়োজন করে। পুঠিয়া-তাহেরপুর রাস্তা সংলগ্ন কার্তিকপাড়া কালির থানকে কেন্দ্র করে মেলাটি গড়ে উঠে।
মেলার দিনে দেবদেবীর পুজা করাই ছিল সে সময়কার হিন্দু সম্প্রদায় গণের মুল লক্ষ্য।
এ ভাবে কয়েক দশক কালির পুজার কেন্দ্র করে মেলা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
হিন্দুদের মেলা হলেও এলাকার মুসলমান, খিষ্টার,বৌদ্ধ,সাঁওতালরা মেলার উৎসবে অংশ নেয়।
মেলার সুনাম এতো বেশি ছড়িয়ে গিয়েছে যে বাগমারা, দূর্গাপুর, নাটোর, চারঘাট সহ অনেক দুর দুরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা মেলায় আসে।
শৌখিন মানুষেরা আসেন বিভিন্ন রকম ঘুড়ি বেচতে, আবার কেউ কিন্তুে। মেলার কেনা কাটা আর ঘোরা ফেরা শেষ করে তারা মনের আনন্দে বাড়ি ফিরতো।
মেলার জায়গা সংকট,পৃষ্ঠপোষকতার অভাব সব মিলেই আজ মেলার এই ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু দেড়শ বছরের এই ঐতিহ্যকে এ ভাবে হারিয়ে দেওয়া যায় না। যে কোন মুল্যে এটাকে আগের মত ফিরিয়ে আনতে হবে। কারন এই সংস্কৃকি শুধু কার্তিকপাড়া গ্রামের নয়।
এই সংস্কৃতি আমাদের পুঠিয়া, তথা রাজশাহীবাসির নিজস্ব সংস্কৃতি। এটা আমাদের অহংকার।
এই সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আপনার আমার আমাদের সবার।