হামলা-লুটপাটের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামীরা,উদ্বার হয়নি খামারের সরঞ্জাম

রাজশাহী

এসএম রুবেল,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গরুর খামার ও মাছের পুকুরে চাঁদা না পেয়ে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় সাত দিন পেরিয়ে গেলেও দুই জন বাদে বাকি আসামীদের গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ৷ তবে লুট হওয়া দুটি গরু উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও হামলা করতে এসে ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেল জব্দ করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার আসামি ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধারে দাবি বাদি পক্ষের।

জানা যায়,শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষার মহসিন আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক কুমিরাদহ বিল এবং কয়েকজনের জমি ইজারা নিয়ে একটি গরু ও হাঁস-মুরগীর খামার স্থাপন করেন। গরুর খামারে আটটি ষাঁড় রয়েছে,যার আনুমানিক মূল্য ২০ লাখ টাকা। বিলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষাবাদ করেন তিনি।

হামলার শিকার খামারী,স্থানীয় বাসিন্দা,প্রত্যক্ষদর্শী,এজাহারের অনুলিপি সূত্রে জানা যায়, শিবগঞ্জের পারচৌকা এলাকার মৃত হাজী আফতাব উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আফসার উদ্দিন ওয়াকফ স্টেটের সাবেক ম্যানেজার ছিলেন। কিন্তু তার দূর্নীতি ও টাকা আত্মসাৎ ও অপকর্মের কারণে আলফাজ উদ্দীনকে ম্যানেজার পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।

সেই থেকে আলফাজ উদ্দীন ওয়াকফ এস্টেটের ক্ষতিসাধন কর ষড়যন্ত্র করতে থাকে। একপর্যায়ে আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে বাৎসরিক ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে বিলে মাছ চাষ করতে ও কোন খামার করতে দিব না বলে হুমকি প্রদান করেন আলফাজ উদ্দিন।

মামলার বাদি আব্দুর রাজ্জাক বলেন,চাঁদা দাবির বিষয়টি ওয়াকফ এষ্টেটের মোতাওয়াল্লী কাইয়ুম রেজা চৌধুরীকে জানালে তিনি বলেন, কোন প্রকার চাঁদা হবেনা। এরপর থেকে আলফাজ উদ্দিন বিভিন্নভাবে প্রাননাশ ও ক্ষয়ক্ষতি করার হুমকি প্রদান করে। গত ১৩ মে রাত সাড়ে আটটার দিকে আলফাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে বোমা,কাতা,হাসুয়া,লোহার রড,কুড়ালসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে নিয়ে সিনেমা স্টাইলে খামারের মধ্যে ঢুকে চিৎকার ও গালিগালাজ শুরু করে এবং আসবাবপত্র, সরঞ্জাম ও দুটি গরু লুটপাট করে।

তিনি আরও বলেন,আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পর পর কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় আলফাজের লোকজন। এরপর খামার থেকে দুটি খুলে নিয়ে চলে যায়। খামারে ব্যবহৃত ত্রিশ হাজার টাকা মূল্যের আইপিএসের মেশিন,নগদ এক লাখ ৭০ হাজার টাকা,দুই লাখ চল্লিশ হাজার টাকার মাছের খাবার,৩ লাখ টাকার দুটি নেট জাল এবং সেখানে থাকা চাল ডালসহ বিভিন্ন খাবার সামগ্রী একটি গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন,পুলিশকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা একটি মোটরসাইকেল ফেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অতঃপর থানা কর্তৃপক্ষ লুট হওয়া বড় ষাঁড় দুটি উদ্বার করে। ঘটনার পরদিন ১৪ মেয়ে সকাল সাতটায় আসামী জাকারিয়া এমের বাড়ীর পিছন থেকে বড় ষাঁড় দুটি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ১৭ মে শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় দুইজন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুরবান ও নুরুল। বাকি আসামীদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

শিবগঞ্জ থানার মামলা নম্বর-৩৩ তারিখ ১৭/৫/২০২৩ জি,আর মামলা নম্বর-২৩৪/২৩
ধারা ১৪৩/৪৪৮/৩৭৯/৩৮০ ৩৮৫/৫০৬(০২)/৩৪ প্যানেল কোড ১৮৬০ তৎসহ ৩/৪/৬
বিস্ফোরক আইন ১৯০৮।

এবিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুবায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন,এ ঘটনায় দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ বাকি গুলো ধরতে আমার সর্বক্ষণ চেষ্টা চালাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *