মোঃ ইসরাফিল হোসেন,রাজশাহী:
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে একজন রিটার্নিং অফিসার ও ১১ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসারের উপস্থিতিতে প্রার্থীদের প্রতীক দেয়া হয়।
আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন। মেয়র পদে ৪ জন, ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে বিপরিতে ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদের বিপরিতে ১১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন (নাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)।
সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় প্রতীক বরাদ্দ। এরপর মেয়র পদে ও পরে ৩০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের হাতে প্রতীক দেয়া হয়।
এদিকে, প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রার্থীরা তাদের ভোটের প্রচারণা শুরু করেছেন। বিশেষ করে মেয়র প্রার্থীরা তাদের টাঙ্গিয়েছেন প্রতীকসহ পোষ্টার। দলীয় প্রতীক হওয়ার তারা আগে থেকে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন তৈরী করে রেখেছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের পরপরই পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পলিথিন মোড়ানো লেমেনিটিং পোস্টার টাঙানো হয়েছে নগরীজুড়ে। এছাড়াও বেলা ২টার পর নগরীতে মাইকে প্রচার শুরু হয়।
প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সদ্য সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন শিল্পকলা একাডেমি থেকে চলে যান তার পিতা জাতীয় চারনেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের কবরে। সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর বিশেষ দেয়া খায়ের করেন। এর পর নৌকা প্রতীক উদ্বোধন করে ভোটের প্রচার শুরু করেন।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করে নির্বাচনী কৌশল ঠিক করেছি। সে অনুযায়ী আমরা ভোটের প্রচার প্রচারণা চালাবো। ১ নং ওয়ার্ড থেকে প্রচার করে ৩০ নং ওয়ার্ডে গিয়ে শেষ করবো। এছাড়াও ইস্তেহার প্রকাশ করে আগামীতে রাজশাহীর জন্য কি কি করবো তা তুলে ধরবো। আশা করছি রাজশাহীকে আরও সামনে দিকে এগিয়ে নিতে নগরবাসী তাদের রায় আমার পক্ষে দিবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন আসলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত আনন্দিত ও খুঁশি হয়, সারাদেশের মানুষকে নিয়ে একটি আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আজকে নির্বাচনে প্রতীক নিলাম, এটার মাধ্যমে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের নেতাকর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হবে। আমি খুবই আশাবাদী এই নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করবো ইন্শাল্লাহ।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী ও সমর্থকরাও ভোটাদের নিয়ে আসেন। আমি মনে করি এই নির্বাচনে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট কাস্ট হতে পারে।
এ সময় খায়রুজ্জামান লিটনের স্ত্রী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেণী, বড় মেয়ে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, ছোটে মেয়ে মাইশা সামিহা জামান শ্রেয়াসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।অপরদিকে প্রতীক নিয়ে প্রচার শুরু করেন অন্য তিন মেয়র প্রার্থীও। জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, আচারণ বিধি লঙ্ঘন করে প্রতীক বরাদ্দের আগেই একজন মেয়র প্রার্থী সমর্থকরা পোষ্টার ফেস্টুর ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে। এভাবে আচারণ বিধি লঙ্ঘন হলে নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্ন হবে। আশা করছে আচারণ বিধি মেনে সবাই প্রচার চালাবেন। পল্লীবন্ধু এইচ এম এরশাদের উন্নয়নের ধারা ফিরিয়ে আনতে এবার নাঙ্গল প্রতীকে রায় দেবে বলে আমি আশা করছি।
রিটানিং অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। ১৫৫টি ভোট কেন্দ্রে তাদের ভোটাকধিকার প্রয়োগ করবেন। ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে এবং প্রতিটি কেন্দ্র বাহিরে ও কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে।