প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে রাজশাহী

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে রাজশাহী

রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দেশে তীব্র ও মাঝাড়ি দাবদাহ প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে দেশ। রাত ও দিনে প্রচন্ড গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। ঘরে বাইরে কোথাও নেই এতটুকু স্বস্তি। তীব্র গরমে হাসপাতালে বাড়ছে জ্বর, ঠান্ডা-কাশি রোগী।

রোববার (০৪ জুন) ঢাকা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আরও চার থেকে ছয় দিন চলবে এমন তাপদাহ। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেখা মিলতে পারে বহুল কাঙ্ক্ষিত মেঘের।

এ যেন দহনকাল। সকাল না হতেই রোদের খরতাপ। বেলা বেড়ে দুপুরের দিকে যা ধারণ করে একখণ্ড অগ্নিগোলকে। ঝাঝালো আগুনের তাপ চলে বিকেল গড়িয়ে গভীর রাত অবধি। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা খরতাপে পুড়ছে মানুষ। পুড়ছে প্রাণ-প্রকৃতি। দুর্বিষহ এ অবস্থায় ঘরে বাইরে কোথাও নেই সামান্যতম স্বস্তি। নেই একদণ্ড শান্তি।

টানা তাপদাহে সারা দেশের মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও রাজশাহী যেন পরিণত হয়েছে একখণ্ড অগ্নিগোলকে। রোববার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগের দিন ছিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

রোববার সকাল ৯টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেশের ৪৪টি স্টেশনের আবহাওয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। দেখা গেছে, এসব স্টেশনের মধ্যে ৩১টিতেই মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে।

তাপদাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কাজের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষজন। রোদ থেকে বাঁচতে অনেকেই বাইরে বের হয়েছেন ছাতা হাতে। অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন গাছের ছায়ায়। তাপদাহে বেশি কষ্টের শিকার শ্রমজীবীরা। প্রাণ ওষ্ঠাগত পরিস্থিতির মাঝেও পেটের ক্ষুধা মেটাতে কাজে বের হতে হচ্ছে তাদের। যদিও শরীর বেয়ে নামা ঘামের সঙ্গে ফুরিয়ে যাচ্ছে জীবনীশক্তিটুকুও।

সংকটময় এ পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে দেশের হাসপাতালগুলোতেও। বয়স্ক ও শিশু রোগী বাড়ছে গরমজনিত ঠান্ডা কাশি ও জ্বর। এ সময়ে বাড়তি যত্নের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

এদিকে আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসেও নেই চটজলদি কোনো সুখবর। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক সময় সংবাদকে জানান, আরও চার থেকে ছয় দিন অব্যাহত থাকবে তাপপ্রবাহ। তবে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষভাগে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উঁকি দেয়ার সম্ভাবনা আছে বহুল কাঙ্ক্ষিত মেঘের। গরমের এ সময়ে অযথা বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

অপরদিকে, তীব্র দাবদাহের কারণে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস ৫ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। চার দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্তের কথা রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী তীব্র দাবদাহের কারণে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়টি বিবেচনা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তাপমাত্রা যদি ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তাহলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয় যখন তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আর অতি তীব্র হয় ৪২ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *