রাজশাহী টাইমস ডেক্সঃ
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বড় ব্যবধানে আবারও মেয়র নির্বাচন হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ও এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। ভোট গণনা শেষে বেসরকারি ফলাফলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সিটির ১৫৫টির মধ্যে সবকটি কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে ১ লাখ ৬০হাজার ২৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৩ হাজার হাজার ৪৮৩ ভোট। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন পেয়েছেন ১০ হাজার ২৭২ ও জাকের পার্টির প্রার্থী গোলাপফুল প্রতীক ১১ হাজার ৭১৩ভোট। এই নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর রাজশাহী সিটিতে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলম (হাতপাখা) নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এই সিটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন।
নির্বাচনে মোট ১৫৫টি কেন্দ্রের সবগুলোতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটকেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হয় ১ হাজার ৫৬০টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। ঢাকায় বসে সিসি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) কমিশনের সদস্যরা।
ভোটগ্রহণ শেষে বুধবার বিকেলে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে।’
ভোটে জিতে টানা দুবার এবং সব মিলে তিনবার মেয়রের চেয়ারে বসছেন খায়রুজ্জামান লিটন। এরআগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয় পান লিটন। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী বুলবুল। লিটন নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬ ভোট। আর বিএনপির মোসাদ্দেক হেসেন বুলবুল ধানের শীষ প্রতীকে পান ৭৭ হাজার ৭০০ ভোট। ভোট পড়েছিল ৭৮. ৮৬ শতাংশ।
এরআগে ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী বুলবুলের ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোটের বিপরীতে খায়রুজ্জামান লিটন ৯৮ হাজার ৩৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
তবে এবার শক্ত প্রতিদ্বন্বদী না থাকায় শুরু থেকেই নির্বাচন ছিল অনেকটাই নিরুত্তাপ। মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন চার জন।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)। তবে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী নির্বাচন বয়কট করেছেন।
খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইসলামী আন্দোলন ভোট বর্জন করায় অনেকটা নির্ভার ছিলেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন।
তবে শেষ পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি বাড়ে। উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৫২ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
এবার ২৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১১ জন। একটি ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী। এখানে ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ছয়জন। তৃতীয় লিঙ্গের একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীও রয়েছেন।