বাগমারায় আগুনে পুড়ে মায়ের মৃত্যু, দগ্ধ দুই ছেলের অবস্থাও শঙ্কাজনক

বাগমারায় আগুনে পুড়ে মায়ের মৃত্যু, দগ্ধ দুই ছেলের অবস্থাও শঙ্কাজনক

রাজশাহী

নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ

রাজশাহীর বাগমারায় অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে এক স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার দুই সন্তান আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তাদের প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) মধ্যরাতে বাগমারা উপজেলার মাদারিগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম ফরিদা ইয়াসমিন (৪৮)। তিনি দুর্গাপুর উপজেলার শিবপুর বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তার স্বামী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে বিশেষজ্ঞ এজাজুল বাশার স্বপন।

এ ঘটনায় দগ্ধ অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ফরিদার দুই ছেলে রাশিদুল ইসলাম (২৬) ও রাফিউল বাসার (২০)। রাশিদুল রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে এবছর এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন। রাফিউল একাদশ শ্রেণির ছাত্র।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনিন জানান, রাশিদুলের শরীরের ২২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। আর রাফিউলের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। দুজনেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। দুই ভাইয়ের অবস্থায় আশঙ্কাজনক। রামেক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। সকালে তাদের নিয়ে পরিবারের লোকজন ঢাকায় রওয়ানা হয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার পরিবারের সবাই মিলে পশু কোরবানি করেন। সেই মাংস কিছু রান্নাবান্না করে পরিবারের সবাই মিলে রাতে খাওয়া-দাওয়া করেন। খাওয়া শেষে এজাজুল বাশার স্বপন রাজশাহী নগরীর বাসায় চলে আসেন। দুই ছেলেকে নিয়ে মা ফরিদা ইয়াসমিন ছিলেন গ্রামের বাড়িতে। গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডের শিকার হন তারা। শোওয়ার ঘরেই দগ্ধ হয়ে মারা যান ফরিদা।

বাগমারার গণিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, উপজেলার মাদারিগঞ্জ বাজারে আশা সিনেমা হলটি কিনে নিয়ে তারা সেখানে বসবাস করতো। নিচতলায় দোকান, দ্বিতীয় তলায় একটি এনজিও ভাড়া থাকে আর তৃতীয় তলায় পরিবারটি বসবাস করতো। গত রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একজন মারা গেছে, দুজন হাসপাতালে আছে। তাদের ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে। তবে, কীভাবে আগুন লাগলো এটি কেউই বলতে পারছে না। যারা বেঁচে আছে তারাও কথা বলতে পারছে না।

বাগমারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মেহেদী হাসান তুহিন বলেন, ভোর পৌনে চারটার দিকে তারা আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে দুটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। তাদের যেখানে রান্নার ব্যবস্থা আছে সেখানে গ্যাস এবং খড়ি দিয়ে রান্নার ব্যবস্থা আছে। সেখানেই আগুনটা বেশি লেগেছিল।

তিনি আরও বলেন, আগুন নেভানোর সময় শোওয়ার ঘরের মেঝে থেকে ফরিদা ইয়াসমিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুই ছেলেকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে একজন ওপর থেকে লাফ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। তাকে বাড়ির পাশের গাছপালার ভেতর পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *