পাবনায় টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী উধাও, সন্ধানদাতাকে পুরস্কারের ঘোষণা

পাবনায় টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী উধাও, সন্ধানদাতাকে পুরস্কারের ঘোষণা

রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : 

পাবনা সদর উপজেলার দোগাছীতে ধার নিয়ে ওষুধ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছেন তারিক হাসান রাসেল (৩৮) নামের এক মসলা ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের পর ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন পাবনার আমলী আদালত।

রায়ের ৩ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও অভিযুক্ত তারিক হাসান রাসেলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তাকে যেকেউ ধরিয়ে দিতে পারবে বলে জানিয়েছেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই আরিফুল ইসলাম। তাকে ধরিয়ে দিতে বা সন্ধান দিলে উপযুক্ত পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন বাদী মাসুদ বিশ্বাস।

অভিযুক্ত তারিক হাসান ওরফে রাসেল পাবনা সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের কুলনিয়া গ্রামের আলহাজ্ব আকমল হোসেন মুন্সির ছেলে। বাদী মাসুদ বিশ্বাস একই গ্রামের চাঁদ আলী বিশ্বাসের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওষুধ ব্যবসায়ী মাসুদের ঘনিষ্ট পরিচয় ছিলেন রাসেলের সঙ্গে। রাসেল দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন ধরনের মসলা নিয়ে এসে পাবনায় পাইকারি বিক্রি করতেন।

সেই ব্যবসার জন্য প্রথমে ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়। সেই টাকা প্রতিদিন দিয়ে দিতো। এরপর হঠাৎ করে একদিন ৫ লাখ টাকা ধার নেয়। সেই টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত দেয়।

এরপর ব্যবসা বড় পরিসরে করার জন্য ১৫ লাখ টাকা ধার নেয়। টাকা ধার নেওয়ার কয়েকদিন পরেই সে পলাতক হয়ে যায়।

এরপর টাকা ধার দেওয়ার উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করে ২০১৯ সালের শেষের দিকে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী মাসুদ বিশ্বাস।

মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চলতি বছরের ২৩ মার্চ অভিযুক্তকে ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন যুগ্ম দায়রা জজ, ২য় আদালত এর বিচারক একরামুল কবির।

রায় ঘোষণার সময় আসামি উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এরপর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন রাসেল।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি রাসেলকে বিশ্বাস করে আমার টাকা দিয়েছিলাম। সে আমার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। আমি এখন নিঃস্ব। আমাকে রাস্তার ফকির বানিয়ে চলে গেছে সে।

আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি যাতে তাকে ধরে আমাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়। শুধু আমি নয় আমার মতো অনেকের থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন। তার সন্ধান অথবা কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে তাকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।’

অভিযুক্ত পলাতক রাসেলের বাবা আকমল মুন্সি বলেন, আমার ছেলে অনেকের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়েছিল। অনেকের টাকাই আমি ফেরত দিয়েছি। কিন্তু কয়েকজনকে ফেরত দিতে পারিনি।

তাদেরকে ৫০% টাকা দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা নিতে অস্বীকার করেছে। এখন আদালতের রায় হওয়ায় ছেলে পালিয়ে গেছে। আমরাও তার কোনও খোঁজখবর পাই না।

এ বিষয়ে আসামির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই আরিফুল ইসলাম বলেন, রায় ঘোষণার পর থেকেই সে পলাতক।

আমরা তাকে ধরতে চেষ্টা করছি। যেহেতু রায় হয়ে গেছে এখন যে কেউ তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করতে পারবেন বা তার সন্ধান দিতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *