নিজস্ব প্রতিবেদন:
নওগাঁর বদলগাছীর উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঐ স্কুলের এক নারী সহকারী শিক্ষিকা (সহকর্মী) র’ সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকান্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমফেসবুকে ছড়ি পড়ে। এঘটনায় অভিভাবক, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে।
প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বেলা ১১ টায় বেগুনজোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে পারসোমবাড়ি বাজারে অত্র এলাকাবাসী, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকবৃন্দের আয়োজনে এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়।
এসময় উক্ত ঘটনার তদন্তের জন্য নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এস.এম জাকির হোসেন বিদ্যালয়ে এলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা তাঁকে ঘিরে রেখে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে বিদ্যালয়ের ভেতরে রেখে বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা।
অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে ফটকের তালা খুলে দেওয়া হয়। এরপর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নওগাঁ যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হলে পারসোমবাড়ি সেতুর ওপর বিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী গ্রামের লোকজন ও শিক্ষার্থীরা পথরোধ করে প্রধান শিক্ষকে চুড়ান্ত বরখাস্তসহ শাস্তির দাবি করেন। সেখান থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবারও বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। বদলগাছী উপজেলার (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন বিদ্যালয়ে আসেন। তাঁরা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন।
এরপর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ.জ.ম.শফি মাহহমুদ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও নারী সহকারী শিক্ষকা (সহকর্মী)কে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সাময়িক বরখাস্তের আদেশের কপি ই-মেইলে পাঠানো হয়। এরপর উত্তেজিত লোকজন শান্ত হলে দুপুর দুইটার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস.এম জাকির হোসেন ও ইউএনও বিদ্যালয় থেকে চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রায় শতাধিক লোকজন বলেন, প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের আশপাশের ৫-৭ টি গ্রামের লোকজন বিদ্যালয়ে জড়ো হয়েছিলেন। বেলা বারোটার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে নওগাঁর উদ্দেশ্য রওনা দেন। তখন পারসোমবাড়ি সেতুর ওপর বিক্ষুব্ধ লোকজন সেতুর উপড় শুয়ে ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের গাড়ি সেতুর পূর্বপাশে দাঁড়িয়ে থাকে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেখান থেকে বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ই-মেইলে প্রধান শিক্ষক ও তাঁর ঐ নারী সহকর্মীকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশের কপি পাঠান। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হলে বেলা দুইটার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও বদলগাছীর ইউএনও বিদ্যালয় থেকে চলে আসেন।