বাগমারা প্রতিনিধিঃ
বাংলা ভাই এই নামের সাথে জড়িয়ে আছে হাজারো বঞ্চনা নিপীড়ন নির্যাতন ও রক্তপাতের ইতিহাস। ২০০৪ সালে এই বাংলা বাহিনীর জুলুম নির্যাতনে বাগমারা সহ আশেপাশের এলাকায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়।
ভিডিও : বাগমারায় বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নির্মিত হচ্ছে শহীদ মিনার
গুম হয় আরো শতাধিক এবং পুঙ্গত্ববরণ করেন আরো অর্ধশত। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতের মদতপুষ্ট হয়ে ওই বছর মার্চ-এপ্রিল বাগমারা সহ আশেপাশের এলাকায় তথাকথিত চরমপন্থী দমনের নামে তাÐব চালায় বাংলা বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান তাত্বিক গুরু শায়ক আব্দুর রহমান ও সেকেন্ড ইন কমাÐ সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলাভাই গঠন করেন বাহিনী নাম দেন জেএমবি। এই জেএমবি’র প্রথম ঘাটি বা আস্তানা স্থাপিত হয় বাগমারার হামিরকুৎসায়।
হামিরকুৎসা বাজার সংলগ্ন কুৎখ্যাত রাজাকার রমজান কাঁয়ার বাড়িতে স্থাপতি হয় বাংলা ভাইয়ের ক্যাম্প। এই ক্যাম্পে বসেই বাংলা ভাই এলাকা দাঁপিয়ে বেড়াতেন। চালাতেন নির্যাতন। রমজান কাঁয়ার বাড়ি সংলগ্ন একটি আম বাগান ও হামিরকুৎসা হাইস্কুল মাঠে টর্চার সেল স্থাপন করে দিনরাত চালাতেন নির্যাতন। সে সময় বাংলা ভাই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বউদ্যোগে নির্মিত শহীদ মিনারগুলো তাগুতি শাসন বলে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন।
সেই অবধি এলাকায় আর কোন শহীদ মিনার স্থাপিত হয়নি। তবে এলাকার তরুণ প্রজন্ম বাংলা ভাইয়ের সেদিনের তাÐবকে স্মরণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষার ইতিহাস তুলে ধরতে স্থানীয় এমপি’র নিকট একটি শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী জানান। পরে বাংলা ভাইয়ের তাÐব চালানো স্থানেই শদীদ মিনার নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেন ইঞ্জি এনামুল হক এমপির ছোট ভাই কেএন ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ এর পরিচালক মনিমুল হক।
তিনি এক মাসের মধ্যেই শহীদ মিনারের আশি ভাগ কাজ শেষ করেন। শহীদ মিনারটি নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নত টাইলস ও মার্বেল পাথর। মনিমুল হক জানান, দ্রæত নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। আগামী ১৫ আগষ্ট জাতির জনকের শাহাদৎ বার্ষিকী জাতীয় শোক দিবসে শহীদ মিনার উদ্বোধন করবেন এমপি এনামুল হক। শহীদ মিনারের পাশে নির্মিত হয়েছে একটি গোলচক্কর।
এখানে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলার দূরত্ব মাইল ফলক লেখাটি পথচারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। স্থানীয় বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন(৪৫) ও তার পিতা শামসুদ্দিন(৭০) সহ আশেপাশের অনেক ব্যবসায়ীরা জানান ২০০৪ সালের সেই বিভীষিকাময় সময়ের কথা। বাংলা ভাই এই মাঠেই বসে নির্যাতন করে চিরতরে পুঙ্গ করে দেন হামিরকুৎসার রফিকুল, আতাউর ও ইব্রাহীম সহ অনেককে।
আজ সেই মাঠেই শহীদ মিনার নির্মিত হতে দেখে তারাও এলাকাবাসীর সাথে আনন্দিত। এর মাধ্যমে কলঙ্ক মোচন হবে। নতুন প্রজন্ম জানবে বাংলা ভাষার ইতিহাস। জাগ্রত হবে দেশপ্রেম।