নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি ইউনিয়নের মুসরাপাড়া ইয়াজপুর গ্রামে জমির বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারজন। সোমবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মনিরুল ইসলাম গান্দুর (৪৫) মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার পাকড়ীর গোরিসার আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে ওই ঘটনায় নিহত মেহের আলী ও নাইমুল ইসলামের ভাই আনসুর জানান, হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। তার মরদেহ মর্গে রয়েছে।
এদিকে চারজন খুন হওয়ার ঘটনায় সোমবার রাতে গোদাগাড়ী মডের থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে আসামী করা হয়েছে ৭১ জনকে। বাকি ৫০ জন অজ্ঞাত আসামী। এ মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এরা হলেন, মো: ইউনুস আলী, মো: রজব আলী, মো: হায়দার আলী, মো: আতাউর রহমান, মো: মঞ্জুর রহমান, মো: ওমর ফারুক ও মো: আনারুল ইসলাম।
সোমবার (১০ জুলাই) রাত ১১টার দিকে গোদাগাড়ী থানায় নিহত সোহেল রানা ছোটনের ভাই হৃদয় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এর আগে সোমবার (১০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পাকড়ি ইউনিয়নের মুসরাপাড়া ইয়াজপুর গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজশাহী নগরীর ভাটাপাড়া গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে ছোটন (৫০), গোদাগাড়ীর বড়গাছী কামারপাড়ার মৃত আলিম উদ্দীনের ছেলে মেহের আলী (৬৫) ও তার ভাই নাইমুল (৬৮) নিহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনিরুল ইসলামের (৪৫) মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পরে ইয়াজপুর গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে পুলিশ বলছে, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গোদাগাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
ওসি আরও বলেন, ইয়াজপুর বিলে সোহেল রানা ছোটনের ১৪ বিঘা জমি রয়েছে। মেহের আলী ও নাইমুল দুই ভাই জমিগুলো বরগা চাষ করে। ওই জমিগুলো বেশ কিছুদিন থেকে নিজের দাবি করে আসছে পাকড়ি গ্রামের আশিক আলী চাঁন। সকালে চাঁন তার দল-বল নিয়ে ওই জমি দখল করে চাষ করতে যায়। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে।
নিহত মেহের আলী ও নাইমুল আলীর ছোট ভাই আনসুর রহমান বলেন, আশিক আলী চাঁন জমিগুলো নিজের দাবি করে আসছিল। তিনি বিএমডিএতে চাকরি করেন। তিনি জমি দখল করার জন্য ভাড়াটে হিসেবে জালাল উদ্দিন ও তার দলবলকে নিয়ে যান। জালাল উদ্দিন পাকড়ি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। জালাল উদ্দিন নিজে নেতৃত্ব দেয় এই হামলায়। তারা তিনজনকে ঘটনাস্থলে পিটিয়ে হত্যা করে। যারা উদ্ধার করতে যায় তাদেরও তারা পিটিয়ে জখম করে।