নাটোরের বড়াইগ্রামে যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে মাথা ন্যাড়া

নাটোরের বড়াইগ্রামে যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে মাথা ন্যাড়া

রাজশাহী

ওমর ফারুক খান নাটোর প্রতিনিধিঃ

নাটোরের বড়াইগ্রাম ৪নং নগর ইউনিয়নের তালশো গ্রামের শারমিন খাতুন(২০) কে বাবার বাড়ি হতে ৫০০০০ হাজার টাকা যৌতুক বাড়ি হতে নিয়ে আসতে বলে তার স্বামী, ভুক্তভোগী টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায়।

তার স্বামী মোঃ সোহাগ হোসেন(২৮) পিতা-মজিবুর রহমান,তার শাশুড়ি মা জয়নব বেগম,তার চাচা শ্বশুর মোঃ সাখায়াত আলী, এবং তার স্ত্রী আসিয়া বেগম একত্রে মিলে গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে মুখে কস্টেপ লাগিয়ে গলায় ছুরি ধরে মাধা ন্যাড়া করে নির্মম নির্যাতন চালান।

নির্যাতনের ১২ ঘণ্টা পর ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূকে স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্বজনরা উদ্ধার করলে প্রথমে বড়াইগ্রাম গ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।পরে শারমিনের বাবা আ:করিম বাদী হয়ে শ্বশুরবাড়ি লোকজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়ের করলেও ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। আটকও হয়নি কেউ। বর্তমানে ওই ভুক্তভোগী শারমিন বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী নারী তার পরিবারের সদস্যরা জানায় গত ৩ বছর আগে জোনাইল ইউনিয়নের জোনাইল স্কুল পাড়া এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমানের ছেলে মোঃ সোহাগ হোসেনের সঙ্গে ওই নারীর ৯০০০০ হাজার দেনমোহর ধাজ্য করিয়া ২০২০ সালে বিবাহ সম্পন্ন হয়।

বিবাহের পর তার বাবার বাড়ী হতে কাবিনের টাকা পুরোপুরি পরিশোধ করলেও তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা এবং তার পাষণ্ড স্বামী মাঝেমধ্যে মারপিট করে বলতো তোর বাবার বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে আয়। ভুক্তভোগী বলেন তার সংসারে সুখের কথা চিন্তা করে তার বাবার বাড়ি হতে বেশ কয়েকবার টাকা-পয়সা নিয়ে গেলেও তাতেও তার সুখ মেলে না, তার উপর প্রতিনিয়তই চলতে থাকে নির্মম নির্যাতন এবং টর্চার সেল।

এবং তার বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া টাকা দিয়ে তার স্বামী প্রতিনিয়ত নেশায় মগ্ন থাকতো। তার স্বামী গত শনিবার রাত্রিতে ০৭/০৭/২৩ বলে তোমার বাবার বাড়ি হতে মোটা অঙ্কের ৫০০০০ হাজার টাকা আনার জন্য চাপ দেয় । তখন ওই ভুক্তভোগী নারী বলে আমার বাবা একজন দরিদ্র মানুষ ৫০০০০ হাজার টাকা কথা হতে দিবে।

তা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে গত রোববার আনুমানিক দুপুর ২ ঘটিকার সময় পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী গোসল করার কথা বলে প্রথমে টিউবওয়েলের পাড় নিয়ে যায় । এবং সেখানেই তার হাত-পা বেঁধে মুখে কসটেপ লাগিয়ে শারীরি মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতে থাকে পাষণ্ড স্বামী।

এবং বাজার থেকে নিয়ে আসা লেজার দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেন,বলে জানান ঐ ভুক্তভোগী নারী। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মোঃ সোহাগ হোসেনকে মুঠুফোনে ফোন করলে তার ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার শাশুড়ির সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপ করে করে জানা যায় যে, তার ছেলের বউয়ের মাথায় ঘা হয়েছিল তাই তার ছেলে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে।

শাশুড়ি নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন এবং বলেন তার ছেলে কাজ করায় তার ছেলেকে তিনি শাসন করেছেন। এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ,আবু সিদ্দিক জানান আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *