স্টাফ রিপোর্টার :
রাজশাহী মহানগরীতে সুদ কারবারি মোহনা’র ব্ল্যালমেইল ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী তার গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে।
শনিবার (২২ জুলাই) বিকাল ৫টায় মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার কেদুর মোড়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে ১২জন ভূক্তভোগী ছাড়াও সুদ কারবারি মোহনা’র দ্বারা লাঞ্ছিত শতাধিক এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
হাদির মোড় এলাকার ভুক্তভোগী রুবিনা বেগম (৪৮) জানায়, ৮/৯মাস পূর্বে সুদ কারবারি মোহনা’র কাছে সুদে ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। গত জুন মাসে সুদ-সহ তাকে ১লাখ ৮২ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। যাহা সুদ কারবারি মোহনা নিজে সাদা কাগজে লিখে দিয়েছেন। তারপরও রুপালী ও এশিয়া ব্যাংকের ৫টি চেকের পাতা আটকে রেখে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দাবি করছেন তিনি। নইলে আদালতে মামলা দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন এই সুদ-কারবারি। এনিয়ে ভুক্তভোগী রুবিনা বেগম খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
বিষয়টি তার বড় ছেলে রয়েলের নজরে আসলে তার মা’য়ের নিকট ফুসলিয়ে সমস্ত ঘটনা জানতে পারেন। এরপর শুক্রবার (২১ জুলাই) রয়েল তার মা’কে নিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে সুদ কারবারি মোহনা’র দ্বারা লাঞ্ছিত এলাকাবাসীরা ভুক্তভোগী রুবিনা বেগমের বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুদ্ধ হয়ে তারা মানববন্ধনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কেদুর মোড় নদীর ধার এলাকার রানুর স্ত্রী ভুক্তভোগী বেলি (৩২) জানায়, সে সুদকারবারি মোহনার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে আজ আবদি ৩ লাখ ৫০ হাজার পরিশোধ করেছেন। এখনো সুদ কারবারির দাবি ২লাখ ৫০ হাজার টাকার। একই এলাকার বাদশার স্ত্রী কোহিনুর (৫২) জানায়, ৩০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে ২ লাখ টাকা সুদ-সহ পরিশোধ করেছেন। তারপরও তার বিরুদ্ধে সুদ কারবারি মোহনা ৫লাখ টাকার মামলা দায়ের করেছে আদালতে। মৃত সুমনের স্ত্রী সেলিনা (৪৬) জানায়, ৫০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে ৩লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এখনও ১ লাখ টাকার দাবি সুদকারবারি। তার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানীও করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। হৃদয়ের স্ত্রী লাবনী (৩২) জানায়, ২৪হাজার টাকা সুদে নিয়ে ৩২ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন।
এখন সুদ-কারবারির দাবি ৫ লাখ টাকার। মফিজুলের স্ত্রী শিউলী ৮হাজার টাকা সুদে নেয়। প্রতি সপ্তাহে তাকে ১২’শত টাকা হারে সুদ দিতে হচ্ছে।
রয়েলের স্ত্রী শ্যামলী (২৫) জানায়, সুদের টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করার পরও ঘুরাচ্ছে সুদ-কারবারি, ব্যাংকের চেক ফেরত দিচ্ছে না। মৃত কাবুর স্ত্রী মেরিনা (৪৯) জানায়, সুদের টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করার পরও ঘুরাচ্ছে সুদ-কারবারি, ব্যাংকের চেক ফেরত দিচ্ছে না। হামিদুলের স্ত্রী কমেলা (৫৩) জানায়, সুদে ৪০ হাজার টাকা গ্রহণ করে। সেই ৪০ হাজার টাকার সুদ ৩টি গাভি বিক্রি করে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এখন সুদ-কারবারি দাবি ৫লাখ টাকার।
নইলে আদালতে মামলার হুমকি। হাদির মোড় এলাকার আব্দুস সালামের স্ত্রী রুনা বেগম (৪৮) জানায়, ৩৮ হাজার টাকা সুদে নেয়। পরিশোধ করেছেন ১লাখ ২হাজার টাকা। আরও ৮০ হাজার টাকার দাবি সু-কারবারির। তারই বোন নুসরাত (৩২) ২০ হাজার টাকিা সুদে নেয়। পরিশোধ করে ৭৭ হাজার টাকা। এখন দাবি ৫০ হাজার টাকার।
এছাড়াও সুদ-কারবারি মোহনার কাছে সুদে টাকা নিয়ে সর্বশান্ত হয়ে এলাকা থেকে পালিয়েছেন ৩/৪টি পরিবার এমনই বক্তব্য এলাকাবাসির।
এ ব্যপারে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে সুদকারবরি মোহনা জানান, বাইরে আছি। ব্যস্ত আছি। পরে কখা বলবো।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) মোঃ ইফতেখার আলম জানান, হাদির নদীর ধার এলাকার ভুক্তভোগী রুবিনা বেগমের দায়ের করা অভিযোগটি আমার দায়িত্বে আছে। সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।