নওগাঁয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সাঈদীর জন্য দোয়া, ইমামসহ গ্রেপ্তার ২

রাজশাহী

নওগাঁ থেকে আমাদের প্রতিনিধির পাঠানো নিউজ:

নওগাঁয় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে মোনাজাতের সময় সদ্যপ্রয়াত জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া চান এক ইমাম।

এ ঘটনার পর মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ওই ইমামসহ এক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে শহরের তাজের মোড় শহীদ মিনার চত্বরে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে শোক দিবস উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠান হয়।

সেখানেই ওই ইমাম সাঈদীর জন্য দোয়া চান। ঘটনার কিছু পর সন্ধ্যার দিকে দুইজনকে থানায় নেয় পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পার-নওগাঁ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি পত্নীতলা উপজেলায়। অপর গ্রেফতার হাফিজুর রহমান তাজের মোড়ের রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে শহীদ মিনারে দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণের আয়োজন করা হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ ই আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

মোনাজাতের শেষ মূহূর্তে এসে ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেন সদ্যপ্রয়াত সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া চাওয়া শুরু করেন। এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাকে সাঈদীর জন্য দোয়া চাইতে নিষেধ করেন। পরে নেতাকর্মীদের তোপের মুখে ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান হাফিজ তাকে সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া পাঠের জন্য বলেছেন বলে ওই ইমাম জানান।

নাম প্রকাশে না করার শর্তে কয়েকজন জানান, এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে মোয়াজ্জেম হোসেন ও হাফিজুর রহমানকে থানায় নিয়ে যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ার ইলিয়াস রেজা তুহিন।

তিনি বলেন, মোনাজাত চলাকালে হঠাৎ ওই ইমাম আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া করেন। তাৎক্ষণিক ওই ইমামের এমন কাণ্ড দেখে নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েন, ক্ষোভ তৈরি হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা সারাদিন শোক দিবসের অনেকগুলো প্রোগ্রাম করেছি। এই একটি ঘটনায় আমরা বিব্রত।

পার-নওগাঁ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক রতন বলেন, শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সদ্যপ্রয়াত সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া করেছেন ইমাম। ওই ঘটনার পর পুলিশ তাকে থানায় নিয়েছে। কী মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এখনো পর্যন্ত সে বিষয়ে আমরা কিছু জানতে পারিনি।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বলেন, তারা দুজন মূলত জামায়াতের নেতা। আগের একটি নাশকতার মামলা ছিল। সেই মামলায় তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সেজন্য তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়। মামলার বাদী পুলিশ। রাতে ওই নাশকতার মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *