স্টাফ রিপোর্টারঃ
‘প্রিয় ভাঁড়ারা ইউনিয়নবাসী, আমি মুসলমান হয়ে একজন মুসলমান মারা যাওয়াতে যদি ইন্না লিল্লাহ বলতে না পারি ওই সংগঠন আমার দরকার নেই। আমি নিজ ইচ্ছায় আজ থেকে ভাঁড়ারা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। ভালো থাকবেন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।’
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য শোক প্রকাশ করায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার পর বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে ভাঁড়ারা ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শেখ রকি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এদিকে, পদত্যাগের পরদিন বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে পাবনা জেলা ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কার করে। এরপর তার ফেসবুক পেজে তিনি স্ট্যাটাস দেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’। তিনি কোন কারণে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললেন তা না লিখলেও নেটিজেনরা মন্তব্য করেছেন বহিষ্কার করায় তিনি ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেছেন।
এ ব্যাপারে ভাঁড়ারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শেখ রকি জানান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পরে শোক জানিয়ে তাৎক্ষণিক ফেসবুকে পোস্ট দেই। শুধু তাই নয়, আমরা যে চারজন একসঙ্গে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি তারাও সাঈদীর জন্য শোক জানিয়ে পোস্ট দেয়।
এসব পোস্ট নিয়ে আপত্তি ওঠে। ওদের তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর নেতাকর্মীরা বলতে থাকেন- আমাকেও নাকি বহিষ্কার করা হবে। চিন্তা করলাম বহিষ্কার করলে কেমন হয়। এর আগে নিজ থেকেই পদত্যাগ করি। এজন্য আমি চিন্তা করেই পদত্যাগ করেছি।
অন্য কোনো দলে যুক্ত হবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা পরে জানানো হবে। তবে আপাতত কোনো চিন্তা নেই।
পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মানবতাবিরোধী মামলায় শাস্তিপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী ছিলেন। তাকে নিয়ে ছাত্রলীগের কিছু নামধারী নেতাকর্মী শোক জানিয়ে পোস্ট দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে।
এমন নীতি আদর্শহীন কাজ ছাত্রলীগ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরামর্শেই শেখ রকিসহ অন্যদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সময়ে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে অবগত করা হয়েছে।