স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়া-৭ আসনের (গাবতলী-শাজাহানপুর) স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলুর বিরুদ্ধে মসজিদ, মন্দির উন্নয়নসহ কাবিখা-কাবিটা, টিআর, এডিবি প্রকল্পের বরাদ্দের নামে টাকা নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের সামনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের তদন্ত চেয়ে স্মারকলিপি দেন।
মানববন্ধনে সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলুর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা নানা রকম স্লোগান দিতে থাকেন। পাশাপাশি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না হলে পরে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মজিবর রহমান বলেন, কোনো প্রকল্প বা কোনো সই এমপি টাকা ছাড়া পাস করেন না। মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, মন্দির সব প্রকল্পেই এমপিকে টাকা দিয়ে ঠিকাদার বা সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হয়। এমনকি পাড়া-মহল্লার টিউবয়েল, সৌরবিদ্যুতের জন্যও দুই থেকে তিন হাজার টাকা নেন এমপি।
এই সদস্য আরও বলেন, এমপি ৪৫ হাজার টাকার টিআর, কাবিখা প্রকল্পের জন্য আগেই ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেন। তারপরও ঠিকমতো কাজ দেন না।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর বলেন, বছর তিনেক আগে কাবিখা-কাবিটা মাটিকাটার প্রকল্প দেওয়ার কথা বলে এমপি আমার কাছ থেকে চার লাখ টাকা নিয়েছিলেন। সেই টাকাও আমি পাইনি, প্রকল্পও হাওয়া হয়েছে। এলাকার এমন কেউ নেই যার টাকা সে লুটেপুটে খায়নি।
শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মিঠু মিয়া বলেন, এমপি আমাকে ১২টি প্রকল্প দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। পরে তিনি গোপনে কাউকে কিছু না বলে প্রকল্পের তালিকা প্রকাশ করেন, যেখানে আমার নাম ছিল না। টাকার জন্য দীর্ঘদিন তার কাছে ধর্ণা দিলেও তিনি সাড়া দেননি। এখনও এক টাকাও বুঝে পাইনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলুর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভূমি) শানজিদা মুস্তারী বলেন, সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ জানিয়ে স্থানীয়রা স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে এই নিয়ে এখনও বিস্তারতি কিছু জানি না। অভিযোগকারীরা আমার সঙ্গে দেখা করেননি।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির মৌখিক সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাপা প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে এমপি হন রেজাউল করিম বাবলু। পরে তার বিরুদ্ধে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগ ওঠে। এছাড়া দুদকেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
২০২০ সালের অক্টোবরে অস্ত্র ও গুলির ম্যাগজিনসহ চেয়ারে বসে এমপি রেজাউল করিম বাবলু নিজের ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করে সমালোচিত হন। সর্বশেষ গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের জন্য দেওয়া টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নুর দিকে পিস্তল তাক করেন সংসদ সদস্য (এমপি) রেজাউল করিম বাবলু।