থানায় বোনের ছেলেকে দেখতে যেয়ে পুলিশের বর্বর নির্যাতনের শিকার খালা,মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে প্রেরণের অভিযোগ

রাজশাহী

এসএম রুবেল ক্রাইম রিপোর্টার চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে থানার ভেতরে সেবা নিতে আসা এক নারীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাকে কারাগারে প্রেরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানায় আটক বোনের ছেলেকে দেখতে গিয়ে এমন বর্বর নির্যাতনের স্বীকার হন শিবগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর কদমতলা আব্দুল মজিদের মেয়ে শিউলী বেগম।

জানা যায়,শিউলীর বোনের ছেলে ও মনাকষা বিশ্বনাথপুরের তোজাম্মেল হকের ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীম ইমনকে গত বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ আটক করে। এর আগে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে ফিরে আসে ইমন। তার বন্ধু শামীম দেখা করব বলে ডাকলে সেখানে গেলে পূর্বের শত্রুতার জেরে পুলিশকে খবর দিয়ে তাকে আটক করে মোটরসাইকেল ছিনতাই মামলায়।

খবর পাওয়া মাএ এ ঘটনার পর থানায় ইমনকে দেখতে যায় শিউলী,ও তার মা সাহেলা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা। গ্রেপ্তারকৃত ইমন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী বলছেন পরিবার,এ নিয়ে বোঝাতে গেলে অস্বীকৃতি জানায় পুলিশ। পরে শিউলী থানার ভিতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এতে ক্ষিপ্ত হয় থানা পুলিশ শিউলীকে থামাতে না পেরে তাকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

গুরুতর আহত শিউলীর মা সালেহা বেগম বলেন, আমরা পুলিশকে মানসিক ভারসাম্যহীন নাতি ইমনের চিকিৎসাপত্র দেখালেও পুলিশ তা শুনেনি। বরং আমাদোরকেই নানারকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। পরে শিউলীকে ওসির নির্দেশক্রমে এ-এস আই:সিরাজ,সহিদুল কনস্টেবল মহিলা পুলিশ পারভিন,ফেনসী,শারমিন,আকলিমা খাতুন। থানার বাবুর্চি মণিসহ তারা,মিলে বেধড়ক পেটায়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয় এবং গুরুতর আহত হয়।

তিনি আরও বলেন,আহত হলেও পুলিশ ক্ষান্ত হয়নি। বরং তাকে আটক করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।পরদিন পুরোপুরি সুস্থ না হলেও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে আদালতের মাধ্যমে সাথে সাথে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় বিবস্ত্র হয়ে গেলেও পুলিশ কোন ছাড় দেয়নি।

এদিকে অনুসন্ধানী প্রতিবেদক ঘটনার বিষয়ে খবর পেয়ে ছুটে যান শিবগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে শিউলির বক্তব্য নিতে চাইলে দেইনি তাকে গার্ড দেওয়া পুলিশ সদস্যরা উল্টো ক্ষিপ্ত হয় প্রতিবেদকের উপর ওসিকে ফোন দিয়েও হয়নি সুরাহা নিতে দেইনি বক্তব্য।

স্থানীয় বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম,আহত শিউলীর স্বজন রহমত আলী জানান,মধ্যজুগীয় কায়দায় শিউলীকে বেধড়ক মারধর করা মারাত্মক অন্যায় হয়েছে। আমরা এট বিচার চাই। পুলিশ এটি অন্যায় করেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানায়। একজন সেবাগ্রহীতা নারীকে নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো থানার মধ্যে এভাবে মারধরের পর মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় আমরা।

কলেজ শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ জানান,পুলিশের উপর আস্থা রেখে মানুষ বিচারের দাবিতে থানায় যায়। থানায় গিয়ে উল্টো এমন হামলা মারধর ও মামলায় পড়তে হলে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা হারিয়ে যাবে। আশা করি,পুলিশ সুপার মহোদয় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি আরও বলেন বর্তমান পুলিশ সুপার ছায়েদুল হাসান যোগদানের পর থেকে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে।

অপরাধমুক্ত এলাকায় পরিনত হয়েছে কমেছে মাদকের চোরাচালাম,শিবগঞ্জ থানাসহ পুরো জেলা। এছাড়াও জনগণ যাতে নিরাপদে নিবিঘ্নে বসবাস ও চলাফের করতে পারে,তাই পুলিশ সুপার সকল থানার ওসিদের যথাযথ নির্দেশনা দেন। এরপরেও কিভাবে এমন ঘটনা ঘটলো তা আমাদের বোধগম্য নয়।

এবিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ বলেন থানায় কোন নারীকে মারধরের ঘটনার কথা অস্বীকার করেন। তিনি জানান,ইমনকে গ্রেপ্তারের পর তার খালা শিউলী থানায় এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও পুলিশের উপর চড়াও হয়। এছাড়াও আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

এমনকি তাদের বিরুদ্ধে সুদ কারবারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মানুষকে নির্যাতন করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ ও মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ মোকাবেলায় ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শিউলীকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *