স্টাফ রিপোর্টারঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে আট বছর বয়সী দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে জেনারুল হক (৫৫) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আর সালিশে ভুল স্বীকার করিয়েই ঘটনার দফারফার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত জেনারুল হক সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের চকঝগড়ু গ্রামের মৃত ফাঁকু মন্ডলের ছেলে।
অভিযোগ আছে, চকঝগড়ু গ্রামের এক প্রবাসী ও এক দিনমজুরের প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া দুই শিশুকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিন সন্তানের জনক জেনারুল হক ওরফে জেনু। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর ওই শিশুরা বাসায় জানালে এলাকায় তা জানাজানি হয়। পরে নিজ বাড়িতে জেনারুলকে শুধুমাত্র ভুল স্বীকার করিয়েই ঘটনার সমাধান করে দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য জহরুল ইসলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার দুপুরের পর ইউপি সদস্য জহরুল ইসলামের বাড়িতে এ সালিশ হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চকঝগড়ু গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আসিপুরদৌলা টনি, মৃত লালু মুন্সির ছেলে আব্দুল মালেক, অনু মন্ডলের ছেলে রুমেল, মৃত রবু মন্ডলের ছেলে মজিবুর ও দুই শিশুর পরিবারের সদস্যরা।
এক শিশুর মা বলেন, ‘আমার মেয়ে পাশের বাড়ির আরেকটি মেয়ের সঙ্গে খেলা করছিল। এ সময় প্রতিবেশী জেনারুল হক ওরফে জেনু সুযোগ বুঝে তাদের দুজনকে তার বাড়িতে ডেকে নেন। ঘরের দরজা বন্ধ করে দুই মেয়ের প্যান্ট খুলে নানারকম অশ্লীল কাজ করেন। তারা চিৎকার করলে ছেড়ে দেন। এমনকি বাসায় কাউকে এসব ঘটনা জানালে হাসুয়া দিয়ে কেটে ফেলবেন ও মারধর করবেন বলে ভয়ভীতি দেখান জেনারুল।’
আরেক শিশুর বাবা বলেন, ‘ঘটনা দুই মাস আগের। দুই শিশু কেউই এমন কোনো কিছু বাসায় জানায়নি। কারণ তাদের অনেক ভয়ভীতি দেখায় জেনারুল। আরেক শিশু তার মাকে জানানোর পর, সেই নারী আমাকে জানায়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও ইউপি সদস্য মিলে সালিশ করেন। শুনেছি সালিশের আগে জেনারুল থেকে ১ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা কিছুই পাইনি। জেনারুল সালিশে শুধু ভুল স্বীকার করেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল আজম, তারেক আজিজ ও আকতার হোসেনসহ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় অনেক আলোচনা, সমালোচনা চলছে। এমন একটি ন্যক্কারজনক ঘটনার বিষয়ে কীভাবে ভুল স্বীকার করিয়ে সমাধান হয়?
অভিযুক্ত জেনারুল হক ওরফে জেনুর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
ইউপি সদস্য জহরুল ইসলাম নিজ বাড়িতে সালিশের কথা অস্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমি সালিশের কিছুই জানি না।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এমনকি এমন ঘটনার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।