নিজস্ব প্রতিবেদক :
থানা কম্পাউন্ডে নিজের বিশ্রাম কক্ষে ডেকে নিয়ে মাদকদ্রব্য আইনের মামলায় কারাগারে থাকা এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে রাজশাহীর চারঘাট থানার ওসি মাহবুবুল আলমের মুখোমুখি আলাপের একটি অডিও ক্লিপ সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সেখানে ওসি বলেছেন, নির্বাচন করতে মন্ত্রী (পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী) আমাকে গাইবান্ধা থেকে চারঘাট থানায় নিয়ে এসেছেন। আমি তার কথা ছাড়া আর কারও কথা শুনি না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের আগে মুক্তা, সাব্বির, শুভকে (সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও মাদক আইনের একাধিক মামলার আসামি) গ্রেপ্তার করা যাবে না।
মন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে না। ৫ লাখ টাকায় মাদক ব্যবসার অনুমতি ও মন্ত্রীকে বলে তাদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা এবং দুই লাখ টাকা দিলে জেলা ডিবির দুই কর্মকর্তাকে বদলির ব্যবস্থা করবেন বলেও ওই অডিওতে শোনা গেছে তাকে।
ফাঁস হওয়া অডিওতে চারঘাট থানার ওসি মাহবুবুল আলমের মন্ত্রীকে জড়িয়ে মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা শতশত সুপারিশ করি; মানুষের দাবিতে করতে হয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছি ১৫ বছরে কেউ বলতে পারবেন না আমার নির্বাচনী এলাকায় কোন কর্মকর্তাকে বদলি করতে হবে, হবে বা কাউকে বদলি করে দিতে হবে আমি এমন কখনই করিনি। পুলিশ প্রশাসন খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে তাদের সাধুবাদ জানায়। এর চেয়ে বেশী কিছু বলাল নেই আমার।
গত শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চারঘাটের ওসি মাহবুবুল আলমের অডিও ক্লিপ ফাঁসের পর রাজশাহী জেলা পুলিশে তোলপাড় শুরু হয়। রাতেই তাকে চারঘাট থানা থেকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে জেলঅ পুলিশ সুপার।
যে নারীর সঙ্গে ওসি বসে এসব খোশ আলাপ জমিয়েছিলেন, সেই নারী গত ১৬ সেপ্টেম্বর ওসি মাহবুবুলের বিরুদ্ধে লিখিত একটি অভিযোগ দেন পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে। ওসি মাহবুব নারীর সঙ্গে যেসব আলাপ করেন তা গোপন রেকর্ডিং যন্ত্রে রেকর্ড করা হয় বলে জেলা পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা। মোট ৬ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের অডিওতে ওসির কথোপকথনে উঠে এসেছে পুলিশের ভেতরের চাঞ্চল্যকর অনেক অজানা কাহিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওসি থানা কম্পাউন্ডে তার শয়নকক্ষে ডেকে নিয়ে সাহারা বেগম (২৮) নামে ওই নারীর কাছে ৭ লাখ টাকা দাবি করেন। গৃহবধূ সাহারা বেগম রাজশাহীর চারঘাট থানার চামটা গ্রামের আব্দুল আলিম কালুর স্ত্রী। মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কালু কিছু দিন ধরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন।