জমি ক্রয়ে বিপাকে ক্রেতা, বাড়ি ছাড়তে ভাড়াটিয়ার চাঁদাদাবী

জমি ক্রয়ে বিপাকে ক্রেতা, বাড়ি ছাড়তে ভাড়াটিয়ার চাঁদাদাবী

রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিনিধি:

রাজশাহী মহানগরীর ১৯ নং ওয়ার্ডের শিরোইল কলোনী ৪ নং গলিতে জমি কিনে বিপাকে পড়েছেন জমি ক্রেতা রশিদ কোরাইশী। জমিতে ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকা জাহিদুল ইসলাম স্ত্রী সামীমা খাতুন জমি ছাড়তে ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

১৬ ডিসেম্বর (শনিবার) এমন অভিযোগ তুলে চন্দ্রিমা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী জমি’র মালিক রশিদ কোরাইশী। অভিযোগ ও ঘটনা সুত্রে জানা যায়, হাজরাপুকুর এলাকার আব্বাস আলীর ছেলে রশিদ কোরাইশী ০.০৪১৫ একর জমি ক্রয় করেন।

জমির প্রকৃত মালিকের ওয়ারিশ (শাহনা আফরোজ, ফারজানা আফরোজ, আশরাফুল রহমান) গণের নিকট থেকে জমিটা ক্রয় করেন তিনি। আরএস মুলে বাড়ি, খারিজ মুলে ভিটাসহ জমিটি ক্রয়ের পরে ভাড়াটিয়া জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সামীমা খাতুন বাসা না ছেড়ে ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা চায়। এ নিয়ে ভুক্তভোগী রশিদ কোরাইশী ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমনের নিকট লিখিতভাবে বিচার চান।

উভয় পক্ষের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে কাউন্সিলর মিমাংসা নিমিত্তে বসলে সেখানে ভাড়াটিয়া ৩০ লক্ষ টাকা চেয়ে বসেন। একই ঘটনায় উভয় পক্ষের অভিযোগে থানায় বসলে সেখানেও বাসা ছাড়তে ৩০ লক্ষ টাকা চান ওই নারী। তিনি ইতোমধ্যে আদালত থেকে ১৪৫ ধারায় নোটিশ করান। শুধু নোটিশ করেই ক্ষান্ত নন তিনি, কাউন্সিলরসহ বিচার মিমাংসা করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

জমি’র বিবরণ থেকে জানা যায়, রাজশাহী জেলার সাব রেজিষ্টী অফিস সদর, বোয়ালিয়া থানার মৌজা- শিরইল, জে এল নং- হাল-১৩৪ মধ্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোয়ালিয়া সেরেস্তায় আর, এস-৫৪৬ নং খতিয়ান জমির প্রকৃত মালিকের ওয়ারিশ গণের নিকট থেকে জমি ক্রয় করেন রশিদ কোরাইশী।

জানতে চাইলে জমি ক্রেতা রশিদ কোরাইশী বলেন, আমি জমি কিনে বিপাকে আছি। ওই নারী দেড় লাখ টাকায় হাত বায়না করেছে মর্মে আমাদের জানিয়েছে। যা আইনত অকার্যকর। ১৪৫ ধারা তিনি নোটিশ করিয়েছে আদালত থেকে। উভয় পক্ষকে আদালত ২৯ জানুয়ারি ডেকেছে।

তিনি আরো বলেন, ওই নারী আমাকে ভয়ভীতিসহ বিভিন্ন মামলা হামলা করে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি ইতোমধ্যে নানাভাবে হয়রানিসহ চাঁদা’র ৩০ লক্ষ টাকা চাইছেন। এমনকি মিমাংসা না মেনে বরং একজন সম্মানিত কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন।

আমি এর সুষ্ঠু বিচার ও সমাধান চাই। কথা বললে ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন বলেন, আমি জমি ক্রেতা রশিদ কোরাইশী লিখিত অভিযোগে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে মিমাংসায় বসি। সেখানে ওই ভাড়াটিয়া নারী বাড়ি ছাড়তে প্রথমে ৩০ লক্ষ টাকা পরে দশ লক্ষ এরপর ২ লক্ষ টাকা চেয়ে মিমাংসা করবে মর্মে জানান। কিন্তু পরে তিনি মিমাংসা না মেনে আমার বিরুদ্ধেই অপপ্রচারে লিপ্ত হয়।

তিনি আরো বলেন, আমার শালিসি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী. বায়তুল মামুর জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা আতাউল মোস্তাফা কাদেরী. মসজিদ কমিটির সভাপতি মো: গোলাম মোস্তফা. সাংবাদিক সালাউদ্দিন আহম্মেদ. তহশিলদার আব্দুর রাজ্জাক সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তবুও জাহিদুলের স্ত্রী সামীমা আমার বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচারসহ মিথ্যাচার করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই মিমাংসায় বসি। এতেই তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অপপ্রচার শুরু করেন। দুপক্ষের অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত করে চন্দ্রীমা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, উভয় পক্ষ নিয়ে বসেছিলাম।

সমাধান হয়নি জাতীয় নির্বাচনের পরে তাঁদের উভয় পক্ষকে নিয়ে আবার বসা হবে। জমিতে ইতোমধ্যে ১৪৫ ধারা জারি করে নোটিশ করা আছে। কথা বললে ভাড়াটিয়া সামীমা খাতুন মিতু বলেন, ২০২০ সালে হাত বায়নানায় জমি’র ওয়ারিশ আশাফুলের সাথে জমি ক্রয়ের কথা হয়।

সে সময় তিন মাস পরে জমি রেজিষ্ট্রি দিতে চেয়ে দেয়নি। একারণে মামলা করি, সে ২ বছর জেলও খাটে। পরে ওই জমি রশিদ কোরাইশীকে রেজিষ্ট্রি করে দেয় তারা। আমি হাত বায়নার পরে জমিতে নিজ খরচে পুকুর ভরাট করে বাড়ি করি। এখন তারা বাড়ি ছাড়তে বলছে।

কিন্তু আমার ক্ষতিপূরণ কে দিবে। সেজন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা চেয়েছি। ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তারা আমাকে মারধর করেন এবং জমি দখলের চেষ্টা করেন। যদিও জমিতে ১৪৫ ধারায় মামলা করা আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *