ফেইসবুকে নিত্যপণ্যের দাম কমার খবরে বাজারে গিয়ে ধোঁকা

রাজশাহী

কাওছার হাবিব- পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিত্যপণ্যের দাম কমেছে- এমন খবর ছড়িয়েছে ফেসবুকে।

সামাজিক মাধ্যমে পণ্যের দামের যে তালিকা ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে বলা হচ্ছে, আলু-৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বয়লার ১৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকা। কিন্তু বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। এই দিকে নওগাঁর পত্নীতলায় বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের দামেই প্রতি কেজি পেঁপে ৫০, পটল ৬০, শশা ১০০, বরবটি ১০০, টমেটো ১৬০, ঢেঁড়শ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে করলা ও বেগুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দ্বিগুণ দাম বেড়েছে ধনিয়া পাতার। ১৫০ টাকার ধনিয়া পাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ২৮০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকায়। চাল, পেঁয়াজ, আদা এখনও আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি আলু ৬০, পেঁয়াজ ১২০-১৩০ ও আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায় আর সোনালি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকায়। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ৫ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

এছাড়া গরুর মাংস ৮৫০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ বাড়লেও মাছের দাম কমেনি। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ মাছ। তবে ইলিশের দাম কিছুটা বাড়তি। গত সপ্তাহের তুলনায় ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছে ইলিশের দাম।

খুচরা বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২৪০-২৬০ টাকায়, শিং ৫০০-৬০০ টাকায়, রুই (দেড়-দুই কেজি) ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়, আর পাবদা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারে তৈরি হওয়া অস্থিরতা কাটেনি। চালের বস্তাপ্রতি (৫০ কেজির বস্তা) ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আসা ক্রেতারা বলেন, ‘ছাত্রদের ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বাজার দরের একটা তালিকা ফেসবুকে পেয়েছি। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও দাম কমার খবর দেখলাম। কিন্তু সে অনুযায়ী বাজারে দামের কোনো মিল পাচ্ছি না। উল্টো বেশ কিছু পণ্যের দাম চড়া।’

বিক্রেতারা বলছেন, আমরা যে দামে পণ্য কিনি তার চেয়ে কমে তো বিক্রি করা সম্ভব নয়। কারা মূল্য তালিকা পেয়েছে, সে ব্যপারে আমাদের কাছে কোন নির্দেশনা নেই। ক্রেতারা বলছেন, আগের সরকার বারবার তদারকির কথা বললেও চাঁদাবাজদের কারণে পণ্যের দাম কমাতে পারেনি। নতুন সরকারের কাছে বাজারে তদারকি করার জোর দাবি জানাচ্ছি। সিন্ডিকেটগুলো ভেঙে দিতে পারলে ক্রেতারা আবার স্বস্তি ফিরে পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *