স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা ইতোমধ্যে চলন্ত যান থেকে মালামাল চুরি চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছেন পুঠিয়া থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে চলন্ত বাহন থেকে মালামাল চুরির ওই ঘটনা ঘটে।
জানা যায় যে, ভালুকগাছি ইউনিয়নের, খামারপাড়া গ্রামের মৃত, হবিবর কবিরাজ এর ছেলে মসলা ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম উপজেলার ধোপাপাড়া হাটে বেচাকেনা করে, রাত আনুমানিক নয়টার দিকে শ্যালো মেশিনের ভুটভুটি গাড়িতে করে আবার মালামাল তুলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পলাশী মোড় হতে এস আর জি বাজারে যাওয়ার সময় ওই রাস্তার মাঝে এসে ভুক্তভোগী জাহিদুলের অগোচরে কৌশলে চলন্ত শ্যালো মেশিনের ভুটভুটি গাড়িতে উঠে পড়ে।
পরে ওই চলন্ত গাড়ি থেকে জাহিদুলের অজান্তেই প্রায় ৪০ হাজার টাকা মুল্যের মসলার একটি বস্তা সরিয়ে ফেলে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ধোপাপাড়া মোহনপুর গ্রামের মতিনের ছেলে মিজানুর। পরে ভুক্তভোগী জাহিদুল স্হানীয় এসআরজি বাজেরে গিয়ে দেখতে পায় যে তার একটি মসলার বস্তা নাই। সাথে সাথে মসলার বস্তার খোজ শুরু করলে পাশে আরেকটি রাস্তা দিয়ে মিজানুর মোটরসাইকেলে করে ওই বস্তা নিয়ে পালানোর সময় তা দেখতে পায় জাহিদুল। পরে তাকে লোকজন নিয়ে ধাওয়া করলে অভিযুক্ত মিজানুর পালিয়ে যায়।
ওই ঘটনাটি হলে অভিযুক্ত মিজানুরকে তার এলাকা থেকে ধরে ফেলে ভুক্তভোগীরা। ওই বিষয়টি স্হানীয় ভাবে মিমাংসা করার জন্য স্হানীয় ইউপি সদস্য সহ বসলেও মসলা চুরি করার বিষয়টি তখনো স্বীকার না করায় কোনো ফায়সালা করা সম্ভব হয় নি। পরে পুলিশের সহায়তা নিয়ে মসলার বস্তা চলন্ত গাড়ি থেকে চুরি করার বিষয়টি স্বীকার করে। ওই ঘটনায় রাতেই মিজানুরকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী মসলা ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, শুধু আজ নয় এর আগেও প্রায় সব মিলে কয়েকবারে আমার এক লাখ টাকার বেশি মালামাল এভাবে চুরি হয়েছে।
একদিন আমার গাড়ি থেকে ওরা মালামাল নামিয়ে নিচ্ছিলেন তখন আমি বুঝতে পেরেও ফাঁকা বিলের মধ্যে গাড়ি না থামিয়ে জীবন রক্ষার্থে চলে যাই। পরে দেখি আমার গাড়ি থেকে এক বস্তা মাল কম। এই বিষয়ে মামলা করলে মালামাল ফেরত পেতে অনেক ঝামেলায় পড়তে হবে সেজন্য মামলা করিনি। আমরা যখন তাদেরকে ধরার জন্য চেষ্টা করেছিলাম সে সময় তারা গাড়িতে তিনজন ছিল। মালামাল ফেরত পেয়েছি এতে আমি অনেক খুশি। আর কোন মামলা-মোকদ্দমার ঝামেলার মধ্যে যাব না।
এ বিষয়ে জানতে পুঠিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল বারী তিনি বলেন, ওই ঘটনায় কেউ বাদি না হওয়ায় ১৫১ ধারায় সন্দেহমুলক মামলা হয়। সকালে মিজানুরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, যেই রাস্তায় মসলার বস্তা চুরির ঘটনা ঘটেছে, ওই এলাকায় ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণ গেছে একজন ভ্যানগাড়ি চালকসহ অন্য চলাচলকারীর। ওইসব ঘটনা কোন কুলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এরমধ্যেই ঘটল আবার এরকম চুরির ঘটনা। এছাড়াও উপজেলার ধোপাপাড়ার মোহনপুর গ্রামে দিনে দুপুরে কয়েকদিন পরপরই ঘটে চুরির মত ঘটনা। যেমন স্থানীয়, হুসেন আলীর ছেলে হাছেন এর বাসায় মাগরিব ও এশার আজানের মাঝামাঝি সময়ে জানালা ভেঙে ৯৪ হাজার ১০০ টাকা নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
শুুকুর প্রাং এর ছেলে ইদ্রিস আলীর বাসা থেকে নগদ টাকা ও ঘরের অনেক মালামাল চুরি হয়ে যায়। নওশাদ আলী এর ছেলে নাসির মাস্টারের বাড়ি থেকে চুরি হয় নগর টাকা স্বর্ণ গহনা। ওয়াজ আলী এর ছেলে বেলাল হোসেনের বাসা থেকে জানালা ভেঙ্গে ৬০ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। হাছেন আলী এর ছেলে রহমত উল্লাহ রহমের বাসা থেকে জানালা ভেঙ্গে চুরি হয় মোবাইল ফোন। শুবের আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম এর বাড়ি থেকে চুরি হয় বাইসাইকেল। খোদা বক্স এর ছেলে আ: জলিল এর বাড়ি থেকে দিনের বেলা সকাল দশটার দিকে চুরি হয়েছিল ২০ হাজার ৭৩০ টাকা দরজা ভেঙ্গে। এছাড়াও ওই এলাকায় রয়েছে আরও চুরির ঘটনা। কিন্তু এদের উপরোক্ত কেউই কারো নামে মামলা বা জিডি করার সাহস পায়নি।